রক্তে এলার্জির লক্ষণ-রক্তে এলার্জি কমানোর উপায়
অ্যালার্জিনের সাথে পুনঃসংযোগের ফলে রক্তে হিস্টামিন ও অন্যান্য রাসায়নিক পদার্থ মুক্তি পায়, যা অ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। এই প্রতিবেদনটিতে আমরা রক্তের এলার্জির লক্ষণ এবং এলার্জি কমানোর বিভিন্ন উপায় নিয়ে আলোচনা করেছি।
পোষ্টের সূচিপত্র
- রক্তে এলার্জির লক্ষণ
- রক্তে এলার্জি কমানোর উপায়
- রক্তে এলার্জির কারণ সমূহ
- রক্তে এলার্জি কেন হয়
- রক্তে এলার্জির মাত্রা কত
- রক্তে এলার্জি পরীক্ষা
- কি খেলে রক্ত এলার্জি কমে
- রক্তের এলার্জি প্রতিরোধ ও পরামর্শ
- লেখকের মন্তব্য
রক্তে এলার্জির লক্ষণ
রক্তে এলার্জি তখন ঘটে যখন শরীরে ইমিউন সিস্টেম কোন নির্দিষ্ট পদার্থ হয়ে ক্ষতিকারক মনে করে এবং এর বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া জানায়। এই পথিকের সাধারণত ইমিউনোগ্লোবুলিন E (lgE) অ্যান্টিবডি দ্বারা পরিচালিত হয়। নিচে রক্তে এলার্জির লক্ষণসমূহ আলোচনা করা হয়েছে:
- ত্বকে চুলকানি: রক্তে এলার্জির ফলে শরীরের বিভিন্ন স্থানে তীব্র চুলকানি হতে পারে।
- ত্বকে ফুসকুড়ি: চামড়ায় ফুসকুড়ি বা চাকার মত র্্যাশ দেখা দিতে পারে।
- শ্বাসকষ্ট: এলার্জির কারণে শ্বাস নিতে অসুবিধা হতে পারে, বিশেষ করে হাঁপানির মত লক্ষণ দেখা দিতে পারে।
- হাঁচি ও সর্দি: নাক দিয়ে ক্রমাগত পানি পড়া, সর্দি ও হাঁচি দেওয়া এলার্জির সাধারণ লক্ষণ।
- চোখে পানি ও চুলকানি: চোখের লালচে ভাব, চুলকানি এবং চোখ দিয়ে পানি পরা হতে পারে।
- পেটে ব্যথা ও ডায়রিয়া: কিছু ক্ষেত্রে বিশেষ করে খাদ্যে এলার্জির কারণে পেটে ব্যথা ও ডায়রিয়া হতে পারে।
- জ্বর: হালকা জ্বর হতে পারে এলার্জিক প্রতিক্রিয়ার কারণে।
- মাথা ঘোরা ও দুর্বলতা: শরীরের দুর্বলতা মাথা ঘোরা এবং ক্লান্তি অনুভূত হতে পারে।
- অ্যানাফাইল্যাক্সিস: গুরুতর এলার্জিক প্রতিক্রিয়া হিসেবে অ্যানাফাইল্যাক্সিস হতে পারে, যা তীব্র শ্বাসকষ্ট, রক্তচাপ কমে যাওয়া এবং চেতনা হারানোর মতো মারাত্মক লক্ষণ সৃষ্টি করতে পারে। এ অবস্থায় মেডিকেল জরুরি অবস্থা এবং তাৎক্ষণিক চিকিৎসা প্রয়োজন হয়।
- গলা ফোলা: এলার্জির কারণে গলা বা মুখের ভেতরের অংশ ফুলে উঠতে পারে, যা শ্বাস-প্রশ্বাসের পথে বাধা সৃষ্টি করতে পারে।
- কফ জমা : শ্বাসকষ্টের সঙ্গে কফ জমা হতে পারে, যা শ্বাস নিতে কষ্টের কারণ হতে পারে।
- হৃদস্পন্দনের তারতম্য: এলার্জির কারণে হৃদস্পন্দন দ্রুত বা ধীর হয়ে যেতে পারে, যা কখনো কখনো অস্বাভাবিক অনুভূতি সৃষ্টি করতে পারে।
- জিহ্বার ফোলা: জিহ্বা ফুলে যাওয়া বিশেষ করে খাদ্যে এলার্জির ক্ষেত্রে শ্বাসকষ্ট ও কথা বলার সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে।
- বমি বমি ভাব ও বমি: কিছু ধরনের এলার্জির কারণে বমি বমি ভাব বা বমি হতে পারে, বিশেষ করে খাদ্যে এলার্জির ক্ষেত্রে।
- শরীর ফুলে যাওয়া: হাত, পা বা মুখের মত অংশে ফোলা দেখা দিতে পারে।
- মুখে ও ঠোঁটে ফোলা ভাব: মুখের ভেতরের ঠোঁট বা মুখে চারপাশে ফলো ভাব দেখা দিতে পারে, যা এলার্জির সাধারণ লক্ষণ।
- মাংসপেশির ব্যথা: এলার্জির কারণে মাংসপেশীতে ব্যথা বা অস্বস্তি অনুভব হতে পারে।
- অবসন্নতা: এলার্জির তীব্র প্রতিক্রিয়া শরীরে অতিরিক্ত ক্লান্তি বা অবসন্নতা সৃষ্টি করে।
- বুকে চাপ: বুকে ভারি বা চাপ অনুভূত হতে পারে, যা এলার্জির গুরুতর লক্ষণ হতে পারে।
- মাথাব্যথা: এলার্জির কারণে মাথাব্যথা বা মাইগ্রেন হতে পারে।
এই লক্ষণ গুলো যদি পর্যবেক্ষণ করা হয় তাহলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত। বিশেষ করে যদি লক্ষণ গুলো গুরুতর বা জীবনঘাতী মনে হয়।
রক্তে এলার্জি কমানোর উপায়
এলার্জি একটি খুব সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যা, যা লক্ষ লক্ষ মানুষের দৈনন্দিন জীবনে প্রভাব ফেলে। এই প্রতিক্রিয়া শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ এবং সিস্টেমের বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। রক্তে এলার্জি সনাক্ত করা ও এর থেকে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এলার্জির তীব্রতা হালকা থেকে শুরু করে জীবনঘাতী পর্যন্ত হতে পারে। নিচে রক্তে এলার্জি কমানোর উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। এই আলোচনার উদ্দেশ্য হলো এলার্জি সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা এবং এলার্জি আক্রান্তদের জন্য সহায়ক উপায় প্রদান করা।
১.অ্যালার্জেন এড়ানো
- চিহ্নিত অ্যালার্জেন গুলো এড়িয়ে চলা: কোন অ্যালার্জেন আপনার রক্তে এলার্জি সৃষ্টি করে তা সনাক্ত করা এবং তা এড়িয়ে চলা। যেমন খাদ্যে এলার্জির ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট খাদ্য এড়িয়ে চলুন, ধুলাবালির এলার্জির ক্ষেত্রে ঘর পরিষ্কার রাখা এবং পোষা প্রাণীর লোম থেকে দূরে থাকা।
২.অ্যান্টিহিস্টামিন ঔষধ
- হিস্টামিনের কার্যকারিতা কমানো: অ্যান্টিহিস্টামিন ওষুধ যেমন লোরাটাডিন, সিটিরিজিন, ফেক্সোফেনাডিন ইত্যাদি শরীরে হিস্টামিনের প্রভাব কমাতে সাহায্য করে, যা এলার্জিক প্রতিক্রিয়া কমায়।
৩.ইমিউনোথেরাপি
- অ্যালার্জিনের সহনশীলতা বৃদ্ধি: নিয়মিত অ্যালার্জিনের ক্ষুদ্র মাত্রা শরীরে প্রবেশ করিয়ে ইমিউন সিস্টেমকে ধীরে ধীরে এই অ্যালার্জিনের প্রতি সহনশীল করে তোলা। এটি দীর্ঘমেয়াদী চিকিৎসা হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
৪.নাকের স্প্রে ও ইনহেলার
- শ্বাসকষ্ট কমানো: নাকি স্প্রে বা ইনহেলার ব্যবহার করে শ্বাসকষ্ট, হাঁচি ও সর্দি কাশি থেকে রেহাই পাওয়া যায়। এগুলো সাধারণত কর্টিকোস্টেরয়েড বাট ডিকনজেস্ট্যান্ট হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
৫.এপিনেফ্রিন ইনজেকশন
- জরুরী চিকিৎসা: অ্যানাফাইল্যাক্সিসের মতো গুরুতর এলার্জিক প্রতিক্রিয়া ক্ষেত্রে এপিনেফ্রিন ইনজেকশন জীবন রক্ষাকারী হতে পারে। এটি শ্বাসনালী খুলে দেয় এবং রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখে।
৬.ধুলাবালি নিয়ন্ত্রণ
- পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখা: ঘর পরিষ্কার রাখ, বালিশ, চাদর ও কার্পেট নিয়মিত পরিষ্কার করা এবং ধুলাবালি কমানোর জন্য ইয়ার পিউরিফায়ার ব্যবহার করা।
৭.সঠিক খাদ্যাভ্যাস
- খাদ্য পরিকল্পনা: খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করে অ্যালার্জেন মুক্ত খাদ্য গ্রহণ করা। খাদ্য গ্রহণের আগে লেবেল পড়া এবং বাইরে খাওয়ার সময় সতর্ক থাকা প্রয়োজন।
৮.প্রচুর পানি পান
- শরীরে পানি শূন্যতা রোধ: প্রচুর পানি পান করলে শরীরের টক্সিন বের হয়ে যায় এবং এলার্জিক প্রতিক্রিয়া কমাতে সহায়তা করে।
৯.ব্যায়াম
- ইমিউন সিস্টেম শক্তিশালী করা: নিয়মিত ব্যায়াম রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে এবং ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করে, যা এলার্জি প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।
১০.স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট
- মানসিক চাপ কমানো: স্ট্রেস বা মানসিক চাপ শরীরের ইমিউন সিস্টেম দুর্বল করতে পারে যা এলার্জির প্রকট বাড়ায়। মেডিটেশন, যোগব্যায়াম এবং পর্যাপ্ত ঘুম স্ট্রেস কমাতে সাহায্য করে।
১১.প্রাকৃতিক চিকিৎসা
- প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার: কিছু প্রাকৃতিক উপাদান যেমন আধা, হলুদ, মধু ইত্যাদি এলার্জি প্রতিরোধে সাহায্য করে। তবে প্রাকৃতিক চিকিৎসা গ্রহণের আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে জরুরী।
১২.এলার্জি কিট বহন
- জরুরী প্রয়োজনে প্রস্তুত থাকা: যাদের গুরুতর এলার্জি আছে তাদের জন্য সবসময় এপিনেফ্রিন ইনজেকশন এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় ওষুধ সঙ্গে রাখা উচিত।
১৩.মেডিক্যাল পরামর্শ
- নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ: চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে এলার্জি পরীক্ষা করানো এবং তার ভিত্তিতে চিকিৎসা গ্রহণ করা উচিত।
১৪.বায়ু বিশুদ্ধকরণ
- এয়ার পিউরিফায়ার ব্যবহার: বায়ুর গুণমান উন্নত করার জন্য ঘরে এয়ার পিউরিফায়ার ব্যবহার করা যেতে পারে, যা বায়ুবাহিত অ্যালার্জেন হ্রাস করতে সাহায্য করে।
১৫.হিউমিডিফায়ার ব্যবহার
- আর্দ্রতা নিয়ন্ত্রণ: ঘরে আদ্রতা বজায় রাখার জন্য হিউমিডিফায়ার ব্যবহার করা যেতে পারে, যা শুষ্কতা ও ধুলাবালি কমায় এবং এলার্জির প্রকোপ কমাতে সাহায্য করে।
এই উপায় গুলো অনুসরণ করে রক্তে এলার্জি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। তবে কোন উপায় কার্যকর না হলে বা সমস্যা হলে অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত।
রক্তে এলার্জির কারণ সমূহ
রক্তে এলার্জি বিভিন্ন ধরনের অ্যালার্জিনের কারণে হতে পারে। এই অ্যালার্জেন গুলো শরীরের ইমিউন সিস্টেমকে সক্রিয় করে তোলে এবং এলার্জিক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। নিচের রক্তে এলার্জির কিছু সাধারণ কারণ উল্লেখ করা হয়েছে:
- দুধ: গরুর দুধ এবং দুগ্ধজাত পণ্যে এলার্জি হতে পারে।
- বাদাম: বিশেষ করে চিনা বাদাম এবং গাছের বাদামে এলার্জি একটি সাধারণ সমস্যা।
- ডিম: ডিমের সাদা অংশের প্রোটিন অনেকের জন্য এলার্জেন হিসেবে কাজ করতে পারে।
- সয়া: সয়া ও সয়াপণ্য অনেকের জন্য এলার্জি সৃষ্টি করতে পারে।
- গম: গমের মধ্যে থাকা গ্লুটেন প্রোটিন অনেকের জন্য এলার্জির কারণ হতে পারে।
- সামুদ্রিক খাবার: মাছ, চিংড়ি, কাঁকড়া ইত্যাদি সামুদ্রিক খাবারে এলার্জি হওয়া সাধারণ একটি বিষয়।
২.পরাগকণা
- ফুলের পরাগকণা: ফুলের পরাগকণা বাতাসে ভেসে বেড়ায় এবং এটি রক্তে এলার্জি সৃষ্টি করতে পারে। যা সাধারণত বসন্ত ও গ্রীষ্মকালে বেশি দেখা যায়।
৩.ধুলাবালি
- ধুলাবালিতে থাকা মাইটস: ধুলাবালির মাইটস বা অণুজীব অনেকের জন্য অ্যালার্জেন হিসেবে কাজ করে। এটি ঘরের বিভিন্ন স্থানে যেমন বিছানা, বালিশ, কার্পেট ইত্যাদিতে অবস্থান করতে পারে।
৪.পোষা প্রাণীর লোম
- কুকুর বা বিড়ালের লোম: পোষা প্রাণীর লোম, ত্বক, লালা এবং প্রসবের প্রোটিন এলার্জি সৃষ্টি করতে পারে। এসব এলার্জেন সহজেই বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে এবং শ্বাসের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করে।
৫.ওষুধ
- অ্যান্টিবায়োটিক: পেনিসিলিন বা অন্যান্য অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ অনেক সময় এলার্জি সৃষ্টি করতে পারে।
- অ্যাসপিরিন ও NSAID: অ্যাসপিরিন ও কিছু নন-স্টেরয়েডাল আন্টি ইনফ্লেমেটরি ড্রাগস (NSAIDs) এলার্জির প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে।
৬.কেমিক্যাল ও রাসায়নিক পদার্থ
- কসমেটিক্স: লোশন, ক্রিম, পারফিউম এবং অন্যান্য কসমেটিক্সে থাকা রাসায়নিক পদার্থ এলার্জিক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে।
- ডিটারজেন্ট: কিছু ধোঁয়া মোছার সামগ্রীতে থাকা রাসায়নিক পদার্থ এলার্জির কারণ হতে পারে।
- কিছু ধাতু: বিশেষ করে নিকেল বা ল্যাটেক্সর মতো কিছু ধাতু বা পদার্থ ত্বকের এলার্জির কারণ হতে পারে।
৭.ইনসেক্ট স্টিংস
- মৌমাছি বা বোলতার কামড়: মৌমাছি বা বোলতার কামড়ে এলার্জিক প্রতিক্রিয়া হতে পারে, যা তীব্র শারীরিক সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
৮.ছত্রাকের স্পোর
- ফাঙ্গাস: ছত্রাকের স্পোর বা মোল্ডের উপস্থিতি এলার্জি সৃষ্টি করতে পারে, বিশেষ করে যদি কোন আদ্র স্থানে থাকে।
৯.ধূমপান ও দূষণ
- বায়ু দূষণ: ধোঁয়া রাসায়নিক ধূলা বা বায়ু দূষণকারী পদার্থ রক্তে এলার্জি সৃষ্টি করতে পারে।
- প্যাসিভ স্মোকিং: ধূমপান এবং দ্বিতীয় হাতের ধোঁয়া এলার্জির তীব্রতা বাড়িয়ে দিতে পারে।
১০.আবহাওয়ার পরিবর্তন
- তাপমাত্রা ও আর্দ্রতার পরিবর্তন: হঠাৎ ঠান্ডা বা গরম আবহাওয়ার কারণে এলার্জির লক্ষণ গরু বেড়ে যেতে পারে।
এ কারণগুলো রক্তে এলার্জির উদ্রেক করতে পারে। অ্যালার্জিনের ধরন ও এর প্রকৃতি অনুযায়ী প্রতিক্রিয়া ভিন্ন হতে পারে। তাই রক্তে এলার্জি সনাক্ত করতে এবং এর প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া অত্যন্ত জরুরী।
রক্তে এলার্জি কেন হয়
রক্তে এলার্জির তখনি হয় যখন শরীরে ইমিউন সিস্টেম কোন নির্দিষ্ট পদার্থকে (যাকে এলার্জেন বলা হয়) ক্ষতিকর হিসেবে ভুলভাবে সনাক্ত করে এবং তার বিরুদ্ধে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে। সাধারণত এই পদার্থগুলো বেশিরভাগ মানুষের জন্য ক্ষতিকর নয়, তবে যাদের ইমিউন সিস্টেম অতিরিক্ত সংবেদনশীল, তাদের শরীর এসব পদার্থের বিরুদ্ধে এন্টিবডি তৈরি করে। এলার্জেন শরীরে প্রবেশ করলে অ্যান্টিবডি গুলো হিস্টামিন এবং অন্যান্য রাসায়নিক পদার্থ মুক্ত করে, যা এলার্জিক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। খাদ্য, ধুলাবালি, পোষা প্রাণীর লোম, পরাগকণা এবং কিছু ঔষধ বা রাসায়নিক পদার্থ ইত্যাদি অ্যালার্জিন হিসেবে কাজ করতে পারে।
আরো পড়ুনঃ কোন কোন ডালে এলার্জি আছে
এসব অ্যালার্জেনের উপস্থিতি শরীরের ত্বকে ফুসকুড়ি, শ্বাসকষ্ট,চোখে পানি, অ্যানাফাইল্যাক্সিসের মতো গুরুতর প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। এলার্জির কারণ ব্যক্তি ভেদে ভিন্ন হতে পারে এবং এর প্রকৃতি ও তীব্রতা নির্ভর করে শরীরের ইমিউন প্রতিক্রিয়ার উপর।
রক্তে এলার্জির মাত্রা কত
রক্তে এলার্জির মাত্রা বা তীব্রতা নির্ভর করে শরীরের ইমিউন প্রতিক্রিয়ার উপর, যা ব্যক্তিভেদে ভিন্ন হতে পারে। এলার্জির মাত্রা সাধারণত নিম্ন, মধ্যম এবং উচ্চ এই তিনটি স্তরে ভাগ করা যায়। নিচে আলোচনা করা হয়েছে:
১.নিম্নমাত্রা
- লক্ষণ: হালকা ত্বকে চুলকানি, চোখে পানি, হাঁচি এবং হালকা সর্দি ইত্যাদি লক্ষণ প্রকাশ পায়। এসব লক্ষণ সাধারণত দৈনন্দিন কাজকর্মে খুব বেশি বাধা সৃষ্টি করে না।
- করণীয়: শরীরে এসব লক্ষণ দেখা দিলে আন্টি হিস্টামিন ঔষধ, নাকের স্প্রে বা চোখের ড্রপ ব্যবহার করে নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
২.মধ্যম মাত্রা
- লক্ষণ: তীব্র চুলকানি, র্য্যাশ বা ফুসকুড়ি, শ্বাসকষ্ট, পেটে ব্যথা এবং দুর্বলতা। এসব লক্ষণ দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় অসুবিধা সৃষ্টি করতে পারে।
- করণীয়: স্টেরয়েড ওষুধ, ইনহেলার বা চিকিৎসকের পরামর্শে ইমিউনোথেরাপি প্রয়োজন হতে পারে।
৩.উচ্চমাত্রা
- লক্ষণ: অ্যানাফাইল্যাক্সিস বা শ্বাসনালী বন্ধ হয়ে যাওয়া রক্তচাপ হঠাৎ কমে যাওয়া এবং চেতনা হারানো সহ জীবনঘাতী হতে পারে।
- করণীয়: তাৎক্ষণিক চিকিৎসা জরুরী। এপিনেফ্রিন ইঞ্জেকশন এবং জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন হয়।
এলার্জির মাত্রা নির্ভর করে কিভাবে ইমিউন সিস্টেম অ্যালার্জিনের প্রতি প্রতিক্রিয়া জানায় এবং তা কতটা তীব্র হয়। এজন্য এলার্জির লক্ষণ ও তীব্রতা দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
রক্তে এলার্জি পরীক্ষা
রক্তে এলার্জি নির্ণয়ের জন্য বিভিন্ন পরীক্ষা করা হয়ে থাকে, যা শরীরে কোন অ্যালার্জেন প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করছে তা সনাক্ত করতে সহায়ক। নিচের রক্তে এলার্জি নির্ণয়ের জন্য কিছু সাধারন পরীক্ষার সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে:
১.স্কিন প্রিক টেস্ট (Skin prick Test)
- পদ্ধতি: এই পরীক্ষায় অ্যালার্জেনগুলোর ক্ষুদ্র পরিমাণ ত্বকের ওপরে প্রয়োগ করা হয় এবং এটি সূক্ষ্ম সুচ দিয়ে চামড়ায় হালকা খোঁচা দেয়া হয়। কিছু সময় পরে যদি চামড়ায় লালচে ফোলাভাব বা চুলকানি দেখা যায় তাহলে এটি সেই অ্যালার্জেনের প্রতি সংবেদনশীল ছিল তার লক্ষণ।
-
ব্যবহার: এই পরীক্ষার দ্রুত এবং অনেক অ্যালার্জেন একসঙ্গে পরীক্ষা করা
যায়।
২.ইন্টাডার্মাল টেস্ট ( Intradermal Test)
- পদ্ধতি: এই পরীক্ষায় অ্যালার্জেনটি ত্বকের নিচে ইঞ্জেকশন দ্বারা প্রবেশ করানো হয়। এর ফলে এলার্জিক প্রতিক্রিয়া দেখা দিলে তা শনাক্ত করা যায়।
- ব্যবহার: সাধারণত স্কিন প্রিক টেস্টে নেতিবাচক ফলাফল আসলে এই পরীক্ষা করা হয়।
৩.প্যাচ টেস্ট (Patch test)
- পদ্ধতি: এই পরীক্ষায় এলার্জেনযুক্ত প্যাচ চামড়ায় লাগানো হয় এবং ৪৮ ঘন্টা পর সেটি খুলে এলার্জিক প্রতিক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করা হয়।
- ব্যবহার: সাধারণত কসমেটিক, ধাতু এবং অন্যান্য রাসায়নিক পদার্থের প্রতি সংবেদনশীলতা নির্ণয়ের জন্য এই পরীক্ষা করা হয়।
৪.রক্ত পরীক্ষা (Specific IgE Blood Test)
- পদ্ধতি: রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে ল্যাবরেটরীতে পরীক্ষা করা হয়, যেখানে শরীরে উপস্থিত স্পেসিফিক ইমিউনোগ্লোবুলিন E (lgE) অ্যান্টিবডির পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়। যদি কোন নির্দিষ্ট অ্যালার্জিনের জন্য lgE এর মাত্রা বেশি থাকে, তাহলে সেটি সেই অ্যালার্জিনের প্রতি সংবেদনশীলতার নির্দেশ করে।
- ব্যবহার: এটি এমন ব্যক্তিদের জন্য উপযুক্ত যারা স্কিন টেস্টে অংশ নিতে পারে না বা যাদের তীব্র ত্বকের সমস্যার জন্য স্কিন টেস্ট ঝুঁকিপূর্ণ।
৫.চ্যালেঞ্জ টেস্ট (Oral Food challenge or Drug Challenge)
- পদ্ধতি: এই পরীক্ষায় চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে সন্দেহজনক অ্যালার্জিনের সামান্য পরীক্ষা ধীরে ধীরে শরীরে প্রবেশ করানো হয় ( যেমন খাবার বা ওষুধ) এবং এর প্রতিক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করা হয়।
- ব্যবহার: এটি খাদ্য বা ওষুধ এলার্জির সনাক্তের জন্য ব্যবহৃত হয়। এই পরীক্ষা শুধুমাত্র বিশেষজ্ঞের তত্ত্বাবধানে করা উচিত, কারণ এটি ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।
৬.ব্লাড ইলিমিনেশন টেস্ট (Elimination test)
- পদ্ধতি: এই পরীক্ষায় সন্দেহজনক অ্যালার্জিন যুক্ত খাদ্যকে ডায়েট থেকে বাদ দেয়া হয় এবং লক্ষণ গুলোর উন্নতি পর্যবেক্ষণ করা হয়। পরে সে খাদ্য পুনরায় ডায়েটে অন্তর্ভুক্ত করা হয় এবং এর প্রতিক্রিয়া দেখা যায়।
- ব্যবহার: খাদ্যে এলার্জি সনাক্ত জন্য এটি কার্যকর।
৭.RAST (Radioallergosorbent test)
- পদ্ধতি: এই রক্ত পরীক্ষায় অ্যালার্জিন-স্পেসিফিক lgE অ্যান্টিবডির মাত্রা পরিমাণ করা হয়, যা অ্যালার্জিনের উপস্থিতি নির্দেশ করে।
- ব্যবহার: এটি এলার্জির প্রাথমিক শনাক্তকরণের জন্য ব্যবহৃত হয়।
এই পরীক্ষাগুলো রক্তে এলার্জি শনাক্ত করতে সাহায্য করে এবং সঠিক চিকিৎসা
পরিকল্পনা নির্ধারণের সহায়ক। এলার্জির লক্ষণ দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে
প্রয়োজনে পরীক্ষা করানো উচিত যাতে এলার্জির উৎস সনাক্ত করা যায় এবং তার
নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হয়।
কি খেলে রক্ত এলার্জি কমে
রক্তের এলার্জি কমানোর জন্য কিছু নির্দিষ্ট খাদ্য শরীরের ইমিউন সিস্টেমকে সমর্থন করে এবং এলার্জিক প্রতিক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। নিচে কিছু খাবারে তালিকা দেয়া হলো যা রক্তে এলার্জি কমাতে সহায়ক হতে পারে:
১.ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার
- মাছ: স্যামন, ম্যাকেরেল, সার্ডিন ইত্যাদি মাছ ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ, যা শরীরের প্রদাহ কমাতে এবং ইমিউন সিস্টেমকে সমর্থন করে।
- আলকুশি ও চিয়া বীজ: এই বীজগুলো ওমেগা ৩ এর একটি ভালো উৎস এবং প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে।
২.প্রোবায়োটিকস সমৃদ্ধ খাবার
- দই: প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ দই অন্ত্রের স্বাস্থ্য উন্নত করে এবং ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করে।
- কিমচি ও সয়ারক্রট: এই ফার্মেন্টেড খাবারগুলো প্রোবায়োটিক্সের ভালো উৎস, যা এলার্জিক প্রতিক্রিয়া কমাতে সহায়ক।
৩.ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার
- সাইট্রাস ফল: কমলা,লেবু, আমলকি ইত্যাদিতে প্রচুর ভিটামিন সি থাকে যা একটি প্রাকৃতিক অ্যান্টিহিস্টামিন হিসেবে কাজ করে এবং শরীরের এলার্জি প্রতিক্রিয়া কমায়।
- বেরি: স্ট্রবেরি এবং রাসবেরি ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ যা প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে।
৪.কোয়ারসেটিন সমৃদ্ধ খাবার
- আপেল: আপেলে কোয়ারসেটিন নামে একটি ফ্ল্যাভোনয়েড থাকে, যা হিস্টামিন এর মুক্তি রোধ করতে সাহায্য করে।
- পেঁয়াজ: পিয়াজেও কোয়ারসেটিন আছে যা শরীরে প্রদাহ কমাতে কার্যকরী।
৫.ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার
- পালং শাক ও অন্যান্য সবুজ শাক সবজি: এই শাকসবজিতে ম্যাগনেসিয়াম থাকে যা শ্বাসকষ্ট ও অন্যান্য অ্যালার্জিক লক্ষণ কমাতে সহায়ক।
- বাদাম: বিশেষ করে আখরোট ও কাজুবাদাম ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ যা এলার্জিক প্রতিক্রিয়া কমাতে সহায়ক।
৬.মধু
- স্থানীয় মধু: নিয়মিত অল্প পরিমাণে স্থানীয় মধু গ্রহণ করলে শরীরের স্থানীয় পরাগ কণার প্রতি সহনশীলতা বৃদ্ধি পেতে পারে যা এলার্জির প্রকোপ কমাতে সাহায্য করে।
৭.আদা
- আদা চা: আদা প্রদাহ বিরোধী গুণাবলী সমৃদ্ধ যা শরীরের এলার্জির প্রতিক্রিয়া নিয়ন্ত্রণের সহায়ক হতে পারে।
৮.হলুদ
- হলুদ ও হলুদের পানীয়: হলুদের মধ্যে থাকা কারকিউমিন প্রদাহ বিরোধী উপাদান হিসেবে কাজ করে এবং এলার্জিক প্রতিক্রিয়া কমাতে সাহায্য করে।
৯.গ্রিন টি
- অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ গ্রিন টি: সবুজ চায়ের মধ্যে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিস্টামিনের মুক্তি রোধ করতে সাহায্য করে।
১০.পানি
- প্রচুর পানি পান: শরীরের হাইড্রেশন বজায় রাখা টক্সিন বের করতে সাহায্য করে, যা এলার্জিক প্রতিক্রিয়া কমাতে সহায়ক।
এই খাবার গুলো রক্তে এলার্জি প্রতিরোধ এবং নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়ক হতে পারে। তবে এলার্জির তীব্রতা বা কোন নির্দিষ্ট অ্যালার্জিনের ক্ষেত্রে খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনের আগে অবশ্য চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত।
রক্তের এলার্জি প্রতিরোধ ও পরামর্শ
রক্তে এলার্জি প্রতিরোধ এবং পরিচালনার জন্য কিছু প্রতিকার এবং পরামর্শ নিম্নরূপ:
প্রতিরোধ
১.অ্যালার্জেন চিহ্নিত করুন এবং এড়ানো
- এলার্জেন চিহ্নিত করা: কোন পদার্থ আপনার এলার্জির কারণ তা সনাক্ত করুন এবং সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিন।
- এলার্জেন এড়ানো: খাবার, পরিবেশ এবং অন্যান্য পদার্থ যেগুলো এলার্জির কারণ হতে পারে সেগুলো এড়িয়ে চলুন।
২.পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা
- ঘর পরিষ্কার রাখা: ধুলাবালি, পোষা প্রাণীর লোম এবং মাইটস কমানোর জন্য নিয়মিত ঘর পরিষ্কার করুন।
- বালিশ ও বিছানা: বালিশ এবং বিছানার চাদর নিয়মিত ধোঁয়া এবং মাইট-প্রুফ কভার ব্যবহার করুন।
৩.খাদ্য নিরাপত্তা
- খাবারের লেবেল পড়া: খাদ্য লেবেল পড়ে নিশ্চিত হন যে তা আপনার অ্যালার্জেন মুক্ত।
- খাবার প্রস্তুতকারক: বাইরের খাবার খাওয়ার সময় সতর্ক থাকুন এবং খাদ্য প্রস্তুতকারককে আপনার এলার্জির বিষয়ে জানান।
৪.বায়ু মান উন্নত করা
- এয়ার পিউরিফায়ার ব্যবহার: বাড়ির বায়ু পরিশুদ্ধ করতে ইয়ার পিউরিফায়ার ব্যবহার করুন, যা ধুলাবালি এবং অন্যান্য এলার্জেন কমাতে সাহায্য করে।
আরো পড়ুনঃ গ্যাস্ট্রিকের জন্য মেথি খাওয়ার নিয়ম
৫.ভ্যাকসিনেশন এবং প্রতিকার
- এলার্জি ভ্যাকসিনেশন: কিছু এলার্জির জন্য ইমিউনোথেরাপি বা এলার্জি ভ্যাকসিনেশন একটি কার্যকরী প্রতিকার হতে পারে।
- প্রোফিল্যাকটিক ওষুধ: প্রাথমিক অবস্থায় এলার্জি ওষুধ ব্যবহার করে লক্ষণ গুলো নিয়ন্ত্রণে রাখা।
পরামর্শ
১.চিকিৎসকের পরামর্শ
- নিয়মিত চেকআপ: এলার্জির উপসর্গ দেখা দিলে নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন এবং প্রয়োজনীয় পরীক্ষা করুন।
- মেডিকেশন ব্যবহারের পরামর্শ: চিকিৎসকের নির্দেশনা অনুযায়ী ওষুধ সঠিকভাবে ব্যবহার করুন।
২.লাইফ স্টাইল পরিবর্তন
- স্ট্রেস কমানো: স্ট্রেস কমাতে মেডিটেশন, যোগব্যায়াম এবং পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করুন। স্ট্রেস এলার্জির লক্ষণ বাড়িয়ে দিতে পারে।
- অতিরিক্ত ফ্যাট এবং প্রক্রিয়াজাত খাবার কমানো: পুকুরে জাত খাবার এবং অতিরিক্ত ফ্যাট সমৃদ্ধ খাদ্য থেকে বিরত থাকুন যা প্রদাহ বাড়িয়ে যেতে পারে।
৩.ফুড ডায়েরি রাখা
- খাদ্য এবং লক্ষণ ট্র্যাক করা: কোন খাবার খাওয়ার পর এলার্জি বাড়ছে কিনা তা ট্র্যাক করুন এবং তা রিপোর্ট করুন।
৪.এলার্জি ডিক্লারেশন কার্ড
- পকেটে রাখা: প্রয়োজনীয় এলার্জি তথ্য সম্বলিত একটি কার্ড পকেটে রাখা, যা জরুরি অবস্থায় সাহায্য করতে পারে।
৫.জরুরী প্রস্তুতি
- এপিনেফ্রিন কিট: যারা গুরুতর এলার্জির জন্য ঝুঁকিপূর্ণ তাদের জন্য এপিনেফ্রিন ইনজেকশন প্রস্তুত রাখা এবং তা ব্যবহারের পদ্ধতি জেনে থাকা উচিত।
৬.পর্যাপ্ত পানি পান করা
- হাইড্রেশন বজায় রাখা: শরীরের টক্সিন বের করতে এবং এলার্জির নিয়ন্ত্রণ রাখতে পর্যাপ্ত পানি পান করুন।
এ প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা এবং পরামর্শগুলো রক্তের এলার্জির লক্ষণ কমাতে এবং
জীবনযাত্রাকে সহজতর করতে সাহায্য করে। এলার্জির প্রতিক্রিয়া যদি তীব্র হয় বা
গুরুতর হয়ে ওঠে তখন চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
লেখকের মন্তব্য
রক্তে এলার্জি একটি জটিল সমস্যা যা দ্রুত শনাক্ত করা এবং যথাযথ ব্যবস্থা নিয়ে জরুরী। উপযুক্ত প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ ও নিয়মিত চিকিৎসার মাধ্যমে এটি নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। সচেতনতা ও সতর্কতা এই সমস্যার মোকাবিলায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
এই প্রতিবেদনটিতে রক্তে এলার্জির লক্ষণ, কারণ এবং এর থেকে প্রতিকার ও নিরাময়ের জন্য বিভিন্ন পদ্ধতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। যা এলার্জিক মোকাবেলায় এই জ্ঞান আপনার সহায়ক হবে বলে আশা করা যায়।
টপ ট্রিক্সস্ আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। সব কমেন্টস রিভিউ করা হয়, ধন্যবাদ।;
comment url