গ্যাস্ট্রিকের জন্য মেথি খাওয়ার নিয়ম ও মেথির উপকারিতা সম্পর্কে জানুন
গ্যাস্ট্রিক সমস্যার জন্য মেথি একটি প্রাকৃতিক ও কার্যকরী সমাধান হতে পারে। মেথি গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা ও অস্বস্তি কমাতে সাহায্য করে এবং হজম প্রক্রিয়ার উন্নত করে। মধ্যে রয়েছে প্রাকৃতিক ফাইবার ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করে এবং গ্যাস্ট্রিক সমস্যা কমাতে সাহায্য করে।
মেথি ( Trigonella feonum-graecum) একটি পরিচিত ঔষধি গাছ, যার বীজ এবং
পাতা উভয়ই ব্যবহৃত হয়।মেধাবীজের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পুষ্টি উপাদান যেমন
প্রোটিন, ফাইবার, ভিটামিন এবং মিনারেল।নিচে গ্যাস্ট্রিকের জন্য
মেথি খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
পোষ্টের সূচিপত্র
মেথি বীজের পুষ্টিগত গুণাগুণ
মেথি বীজ যা বিজ্ঞানসম্মতভাবে একটি প্রাকৃতিক ঔষধি গাছ যা বিভিন্ন পুষ্টি
উপাদানের পরিপূর্ণ। মেথির পুষ্টিগত গুনাগুন অনেক। নিচে তা তুলে ধরা হলোঃ
- প্রোটিনঃ মেথি বীজে উচ্চমাত্রায় প্রোটিন থাকে, যা শরীরের কোষের গঠন ও মেনামতির জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। ১০০ গ্রাম মেথি বীজে প্রায় ২৩ প্রোটিন থাকে।
- ফাইবারঃ মেথি বীজে প্রচুর পরিমাণে ডায়েটারি ফাইবার রয়েছে, যা হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে। এটি পেটের গ্যাস কমায় এবং হজমে সহায়ক হয়। ১০০ গ্রাম মেথি বীজে প্রায় ২৫ গ্রাম ফাইবার থাকে।
- ভিটামিনঃ মেথি বীজে বিভিন্ন ভিটামিন থাকে। যেমন ভিটামিন 'এ' যা চোখের স্বাস্থ্য রক্ষা ও দৃষ্টিশক্তি বাড়ায়। ভিটামিন 'বি৬' যা সায়ুতন্ত্রের স্বাস্থ্যরক্ষা করে এবং মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে। ভিটামিন সি যা রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বাড়ায় এবং শরীরকে সর্দি-কাশি থেকে রক্ষা করে। ফোলেট ভিটামিন 'বি৯' যা গর্ভাবস্থায় ভ্রুণের সঠিক বিকাশে সহায়ক।
- মিনারেলঃ মেথি বীজে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মিনারেল থাকে। যেমন আয়রণ যা রক্তে হিমোগ্লোবিন গঠন করে এবং রক্তশূন্যতা প্রতিরোধ করে। ম্যাগনেসিয়াম যা মাংসপেশির কার্যকারিতা বাড়ায় এবং হার্টের স্বাস্থ্য রক্ষা করে। ক্যালসিয়াম যা দাঁত ও হাড়ের গঠন মজবুত করে। পটাশিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে এবং হার্টের কার্যকারিতা বাড়ায়, ফসফরাস শক্তি উৎপাদনে সহায়ক এবং হার্টের গঠন মজবুত করে।
- জিঙ্কঃ রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বাড়ায় এবং ত্বকের স্বাস্থ্য রক্ষা করে।
- অ্যান্টিঅক্সিডেন্টঃ মেথি বীজে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা শরীরের ফ্রি রেডিকেল দূর করতে সাহায্য করে। এবং এটি বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে সহায়ক এবং ত্বককে সুস্থ ও উজ্জ্বল রাখে।
- ফাইটোকেমিক্যালসঃ মেথি বীজে প্রচুর ফাইটোকেমিক্যালস থাকে যেমন স্যাপনিন, ফ্ল্যামনয়েডস এবং অ্যালকালরেডস থাকে যা শরীরের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে সহায়ক।
- ফ্যাটঃ মেথি বীজে প্রায় ৬% ফ্যাট থাকে যা শরীরে শক্তি উৎপন্ন করে।
- কার্বোহাইড্রেটঃ মেথি বীজে প্রায় ৫৮% কার্বোহাইড্রেট থাকে যা শরীরের শক্তির প্রধান উৎস হিসেবে কাজ করে।
মেথি বীজের পুষ্টিগত তথ্য ( প্রতি ১০০ গ্রাম মেথি বীজে)
- শক্তিঃ ৩২৩ ক্যালোরি
- প্রোটিনঃ ২৩ গ্রাম
- ফ্যাটঃ ৬ গ্রাম
- কার্বোহাইড্রেটঃ ৫৮ গ্রাম
- ফাইবারঃ ২৫ গ্রাম
- আয়রনঃ ৩৩.৫৩ মিগ্রা ( ১৮৭% দৈনিক প্রয়োজন)
- ম্যাগনেসিয়ামঃ ১৯১ মিগ্রা (৪৮% দৈনিক প্রয়োজন)
- ক্যালসিয়ামঃ ১৭৬ মিগ্রা (১৮% দৈনিক প্রয়োজন)
- পটাশিয়ামঃ ৭৭০ মিগ্রা ( ২২% দৈনিক প্রয়োজন)
- ফসফরাসঃ ২৯৬ মিগ্রা ( ৪২% দৈনিক প্রয়োজন)
- ভিটামিন সিঃ ৩ মিগ্রা (৫% দৈনিক প্রয়োজন)
- ফোলেটঃ ৫৭ মাইক্রগ্রাম ( ১৪% দৈনিক প্রয়োজন)
মেথি বীজের পুষ্টিগুণ বিবেচনায় রেখে এতে খাদ্য
তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে। মেথি বীজ বিভিন্ন পদ্ধতিতে
ব্যবহার করা যায়। নিয়মিত মেথি বীজ ব্যবহার করলে শরীরের পুষ্টির
অভাব পূরণ হয় এবং গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা সমাধান হয়।
গ্যাস্ট্রিকের জন্য মেথি খাওয়ার উপকারিতা
মেথি একটি প্রাকৃতিক উপাদান যা বহু প্রাচীনকাল থেকে বিভিন্ন স্বাস্থ্যসেবার
সমাধানে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। গ্যাস্ট্রিকের সমস্যার জন্য মেথি খাওয়া
অত্যন্ত কার্যকরী হতে পারে। কেননা মেথিতে রয়েছে প্রচুর পুষ্টি
উপাদান যা শরীরের বিভিন্ন কার্যক্রমকে উন্নত করতে সাহায্য করে। নিচে
গ্যাস্টিকের জন্য মেথি খাওয়ার উপকারিতা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হলোঃ
- মেথি হজম প্রক্রিয়া উন্নত করে ঃ মেথি ভিজে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে যা হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করে। এটি কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে এবং পেটের গ্যাস কমাতে সাহায্য করে। মেথিতে মিউসিলেজ উপাদান হজম প্রক্রিয়াকে সহজ করে তোলে এবং গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করে
- পেটের গ্যাস কমানোঃ মেথিতে থাকা স্যাপনিন এবং মিউসিলেজ পেটের গ্যাস কমাতে সাহায্য করে।মেথি খেলে পেটে গ্যাসের পরিমাণ কমে এবং অস্বস্তি দূর হয়।
- অম্লতা নিয়ন্ত্রণঃ মেথি তে অ্যালকালাইন প্রভাব গ্যাস্ট্রিকের অম্লতা কমাতে সাহায্য করে। এটি পেটের এসিড নিয়ন্ত্রণে রেখে অম্লতা থেকে মুক্তি দেয়।
- প্রদাহ কমানো: মেথির এন্টি ইনক্রিমেন্টরি গুণাগুণ পেটের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে. গ্যাস্ট্রিকের কারণে হওয়া পেটের প্রদাহ কমাতে মেথি খুবই কার্যকরী.
- আলসার প্রতিরোধে মেথি: মেথি পেটের আস্তরণকে সুরক্ষা এবং আলসার প্রতিরোধ করে।মেথির মিউসিলেজ পেটের আস্তরণকে মসৃণ করে তোলে এবং আলসার সৃষ্টির যোগী কমায়।
- ক্ষুধা বাড়ানোঃ মেথি ক্ষুধা বাড়াতে সাহায্য করে। এটি হজম প্রক্রিয়ার উন্নত করে এবং পেটের সমস্যা দূর করে ক্ষুধা বাড়াতে সাহায্য করে।
- অন্ত্রের স্বাস্থ্য রক্ষায় মেথিঃ মেথি অন্ত্রের স্বাস্থ্য রক্ষা করতে সাহায্য করে। এটি অন্ত্রের প্রদাহ কমায় এবং অন্ত্রের কার্যকারিতা উন্নত করে।
- ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ প্রতিরোধঃ মেথিতে ব্যাকটেরিয়াল গুনাগুন রয়েছে। যা পেটের ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণ প্রতিরোধে সহায়ক। মেথি পেটের ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে এবং সংক্রমণ প্রতিরোধ করে।
- ডিটক্সিফিকেশনঃ মেথি ডিটক্সিকেশন প্রক্রিয়াকে উন্নত করে। এটি শরীর থেকে ক্ষতিকারক ট্রক্সিন বের করে দিয়ে পেটের গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করে।
- স্নায়ুতন্ত্রের কার্যকারিতা উন্নতঃ মেথি তে থাকা ভিটামিন বি৬ এবং ম্যাগনেসিয়াম স্নায়ুতন্ত্রের কার্যকারিতা উন্নত করে। এটি মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে এবং মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে।
মেথি একটি প্রাকৃতিক উপাদান যা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যার সমাধানে অত্যন্ত কার্যকরী।
প্রক্রিয়াকে উন্নত করে, পেটের গ্যাস কমায়, অম্লতা নিয়ন্ত্রণে রাখে
এবং প্রদাহ কমায়। অতএব মেথির পুষ্টিগুণ বিবেচনায় খাদ্য তালিকায়
অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে। তবে মেথি খাওয়ার আগে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেয়া
উচিত।বিশেষ করে যারা গর্ভবতী মহিলা এবং ডায়াবেটিস রোগী।
মেথি খাওয়ার নিয়ম
মেথি একটি প্রাকৃতিক উপাদান যা বহ্মুখী স্বাস্থ্য উপকারিতার জন্য পরিচিত।
মেথি খাওয়ার বিভিন্ন নিয়ম রয়েছে যা নির্ভর করে আপনি কোন উদ্দেশ্যে মেথি
ব্যবহার করতে চান। নিচে মেথি খাওয়ার কয়েকটি সাধারণ নিয়ম পদ্ধতি উল্লেখ
করা হলোঃ
মেথি বীজ ভিজিয়ে রেখে
১. উপকরণ
- ১-২ চামচ মেথি বীজ
- ১ গ্লাস পানি
২. প্রস্তুতি ও ব্যবহার
- রাতে এক গ্লাস পানিতে মেথি বীজ ভিজিয়ে রাখুন।
- সকালে খালি পেটে এই ভেজানো মেথি বীজ চিবিয়ে খান।
- আপনি চাইলে ভেজানো মেথি বীজের পানিও পান করতে পারেন।
মেথি পাউডার
১. উপকরণ
- ১-২ চামচ মেথি পাউডার।
- এক গ্লাস গরম দুধ বা পানি।
২. প্রস্তুতি ও ব্যবহার
- গরম পানি বা দুধে মেথি পাউডার মিশিয়ে নিন।
- প্রতিদিন সকালে খালি পেটে এই মিশ্রণ পান করুন
মেথির চা
১. উপকরণ
- ১ চা চামচ দ মেথি বীজ
- ১ কাপ গরম পানি
- মধু (ঐচ্ছিক)
২. প্রস্তুতি ও ব্যবহার
- এক কাপ গরম পানিতে মেথি বীজ যোগ করুন।
- ৫-১০ মিনিট ঢেকে রাখুন।
- তারপর ছেঁকে নিয়ে মেথি চা পান করুন।
- স্বাদের জন্য মধ্য যোগ করতে পারেন।
মেথি ও মধু
১. উপকরণ
- ১-২ চামচ মেথি পাউডার
- একটি মাপ পরিমান মধু
২. প্রস্তুতি ও ব্যবহার
- ১-২ চামচ মেথি পাউডার।
- এবং সুবিধা মতো মধু মিশিয়ে খান।
মেথি ও লেবুর রস
১. উপকরণ
- ১-২ চামচ মেথি পাউডার
- ১ চামচ লেবুর রস
২. প্রস্তুতি ও ব্যবহার
- ১-২ চামচ মেথি পাউডারের সাথে সাথে এক চামচ লেবুর রস মিশিয়ে প্রতিদিন সকালে পান করুন।
- গ্যাস্ট্রিকের সমস্যার জন্য মেথি ও লেবুর রস বেশ উপকারী।
মেথি পানি
১. উপকরণ
- ১-২ চামচ মেথি
- ১ গ্লাস পানি
২. প্রস্তুতি ও ব্যবহার
- রাতে একগ্লাস পানিতে মেথি ভিজিয়ে রাখুন।
- সকালে এই মেথি পানি ছেঁকে নিয়ে পান করুন।
মেথি বীজের পেস্ট
১. উপকরণ
- ২-৩ চামচ মেথি বীজ
- পরিমান মত পানি
২. প্রস্তুতি ও ব্যবহার
- মেথি বীজ গুঁড়ো করে পেস্ট তৈরি করুন।
- এই পেস্ট দই বা মধুর সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন।
মেথি খাওয়ার বিভিন্ন নিয়ম এবং পদ্ধতি রয়েছে, যা নির্ভর করে আপনি কোন
উদ্দেশ্যে মেথি ব্যবহার করতে চান। নিয়মিত এবং পরিমিত পরিমাণে মেথি খেলে
গ্যাস্ট্রিক হজমের সমস্যা, ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণ, এবং অন্যান্য
স্বাস্থ্য সমস্যা সমাধান সম্ভব।
গ্যাস্ট্রিকের জন্য মেথি খাওয়ার নিয়ম
অনেক সময় দেখা যায় গ্যাস্ট্রিকের সমস্যার সমাধান পেতে ওষুধের পেছনে অনেকেই
ছোটাছুটি করে। তবে যদি আপনার গ্যাস্ট্রিক প্রাথমিক পর্যায়ে থাকে তাহলে
আপনি ঘড়ুয়া ভাবে প্রাকৃতিক উপাদান মেথি ব্যবহার করে গ্যাস্ট্রিক দূর করতে
পারেন। গ্যাস্ট্রিক দূর করতে মেসি খাওয়ার নিয়ম নিচে আলোচনা করা হলোঃ
- প্রথমে একটি গ্লাসে পানি নিয়ে তার মধ্যে এক চামচ মেথি ভিজিয়ে রাখুন।
- ১০ থেকে ১৫ মিনিট পর সেই মেথি ভেজানঅ পানি পান করুন।
- চাইলে স্বাদ বাড়ানোর জন্য মধু যোগ করতে পারেন।
- এক গ্লাস গরম পানিতে এক চামচ আস্ত মেথি ভিজিয়ে ১৫ মিনিটের জন্য রেখে দিন।
- ১৫ মিনিট পর ওই পানিটি পান করলে গ্যাস্ট্রিক থেকে মুক্তি মিলবে।
- সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে মেথি ভেজানো পানি খেলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা খুব সহজেই দূর হয়।
- এক গবেষণায় দেখা গেছে অন্তত ৬ সপ্তাহ পর্যন্ত দিনে দুইবার করে মেথি রস নিয়মিত পান করলে এর উপকারিতা পরিপূর্ণভাবে পাওয়া যায়।
- কেউ যদি আস্ত মেথি খেতে না চান তাহলে মেসি পেস্ট করেও ভাত বা অন্যান্য সুষম খাদ্যের সাথে খেতে পারেন।
এই নিয়মগুলো মেনে চললে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া
যায়। সমস্যা খুব বেশি বা দীর্ঘস্থায়ী হলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া
উচিত।
গ্যাস্ট্রিকের জন্য মেথি ব্যবহারে সতর্কতা
গ্যাস্ট্রিক বা পেটের সমস্যা রয়েছে যাদের তাদের জন্য মেথি ব্যবহার করতে হলে কিছু
সর্তকতা মেনে চলা উচিত। নিম্নলিখিত নিয়মগুলি মেথি ব্যবহারের ক্ষেত্রে
গুরুত্বপূর্ণঃ
- মেথি প্রবণতা চেক করুনঃ কিছু মানুষ মেথি খেলে গ্যাস্টিক সমস্যা হতে পারে। যদি আপনার গ্যাস্ট্রিক সমস্যার সাথে মেথির প্রতি কোন প্রতিক্রিয়া থাকে, তবে মেথি ব্যবহারে সতর্ক থাকুন।
- পরিমিত পরিমাণে খাওয়া উচিতঃ মেথিতে কিছুটা এনজাইম আছে যা পেটে অতিরিক্ত গ্যাস তৈরি করতে পারে। তাই অতিরিক্ত মেথি খাওয়া থেকে হজমের সমস্যা হতে পারে।
- মাত্রা সম্পর্কে সতর্ক হোনঃ মেথির প্রতিষ্ঠিত উপকারিতা রয়েছে তবে অধিক ব্যবহারে গ্যাস্ট্রিক সমস্যার সমাধান নাও হতে পারে। প্রথমে একটি ছোট মাত্রা দিয়ে শুরু করুন এবং প্রতিদিনের জন্য মেথির পরিমাণটি সীমাবদ্ধ রাখুন।
- শুধুমাত্র পানি বা দুধে মেথি খানঃ মেথি বীজ অথবা পাউডার সহ অন্যান্য পদার্থ যোগ করা হলে গ্যাস্ট্রিক সমস্যা হতে পারে। সেই জন্য শুধুমাত্র পানি বা দুধের মিশ্রণে মেথি খেলে গ্যাস্ট্রিকের উপকারিতা বেশি পাওয়া যেতে পারে।
- অ্যালার্জির জন্য সতর্কতাঃ যদি মেথি ব্যবহারে ব্যবহারে আপনার কোন অ্যালার্জি থাকে তবে মেথি ব্যবহারের আগে চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করা উচিত।
- গর্ভবতী মহিলা ও শিশুদের জন্য সতর্কতাঃ গর্ভবতী মহিলাদের এবং শিশুদের জন্য মেথি ব্যবহারের আগে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা উচিত।
- ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য সতর্কতাঃ আপনার যদি ডায়াবেটিস থাকে তাহলে মেথি ব্যবহারের আগে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
সামগ্রিকভাবে মেথি একটি প্রাকৃতিক উপাদান যা উচ্চমাত্রায় গ্যাস্ট্রিক
সমস্যাগুলি কমাতে সহায়ক হতে পারে। তবে সঠিক উপকরণ ও সতর্কতার সাথে ব্যবহার করা
প্রয়োজন। যদিও অনেকের জন্য এটি উপকারী হতে পারে তবে কিছু ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত
অভিজ্ঞতা বা শর্তের সাথে সম্ভাব্য রোগের প্রকৃতি হতে পারে।
গ্যাস্ট্রিকের জন্য মেথি খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা নিয়ে কিছু ছোট প্রশ্ন ও তার উত্তর
গ্যাস্ট্রিকের জন্য মেথি খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা নিয়ে অনেকেরই ছোট
ছোট কিছু প্রশ্ন থাকে। এই আলোচনায় ছোট ছোট কিছু প্রশ্ন ও উত্তর দেওয়ার
চেষ্টা করা হলোঃ
প্রশ্ন ১। মেথি কি গ্যাস্ট্রিকের কাজ করে?
উত্তরঃ হ্যাঁ মেথি গ্যাস্ট্রিক ও বদহজমের মহাঔষধ হিসেবে কাজ
করে।
প্রশ্ন ২। গ্যাস্ট্রিকের জন্য মেথি কতটা, কিভাবে এবং কতদিন খেতে হবে
?
উত্তরঃ মেথি আপনি আস্ত ,পাউডার বা পেস্ট করে পরিমিত
পরিমাণে দিনে ১ থেকে ২ বার খেতে পারেন যতদিন ইচ্ছা।
প্রশ্ন ৩।গ্যাস্ট্রিকের জন্য মেথি ভেজানো পানি খেলে কি কি উপকার হয় ?
উত্তরঃ মেথি ভেজানো পানি পেটের সমস্যা যেমন পেট
কামড়ানো, এসিডিটি এবং গ্যাস্ট্রিক সমস্যার জন্য খুবই
ভালো। এটি হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করে তাৎক্ষণিক প্রতিলিপির সমস্যার সমাধান
করে।
প্রশ্ন ৪। গ্যাস্ট্রিক কি মাথাতে যেতে পারে ?
উত্তরঃ গ্যাস্ট্রিক পাকিস্থলি ও খাদ্য হজম তন্ত্রের সমস্যা। মাথা
তো হজম তন্ত্রের অংশ না। তাই মাথায় গ্যাস্ট্রিক যেতেও পারে না।
প্রশ্ন ৫। কাদের মেথি খাওয়া উচিত নয় ?
উত্তরঃ গর্ভবতী মহিলাদের গর্ভধারণের সময় মেথি খাওয়া কিন্তু উচিত নয় যদি
তাদের কোন এলার্জি বা অন্যান্য পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া থাকে। সেক্ষেত্রে
সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত।
শেষ কথা
শেষ কথা হিসেবে বলা যায় যে উপরোক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে গ্যাস্ট্রিকের
জন্য মেথি একটি প্রাকৃতিক ও কার্যকরী উপাদান। হজম প্রক্রিয়া
উন্নত করতে, পেটের গ্যাস কমাতে এবং গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা
থেকে মুক্তি দিতে সাহায্য করে। তবে মেথি খাওয়ার আগে অবশ্যই বিশেষজ্ঞের
পরামর্শ নেয়া উচিত। বিশেষ করে যারা গর্ভবতী মহিলা এবং ডায়াবেটিস রোগী। মেথির
বিভিন্ন উপকারিতা উপভোগ করতে নিয়মিত মেথিব্যবহার করা উচিত।
টপ ট্রিক্সস্ আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। সব কমেন্টস রিভিউ করা হয়, ধন্যবাদ।;
comment url