মহিলাদের চুল পড়া বন্ধ হওয়ার ৫টি সহজ উপায়

মহিলাদের চুল পড়া বন্ধ হওয়ার সহজ উপায় সবাই খুঁজে থাকেন। ঘন লম্বা চুল মহিলাদের সৌন্দর্যের একটি অন্যতম অংশ। নারীদের ক্ষেত্রে চুল পড়ার সমস্যা অনেক বেশি।চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় এঁকে এন্ড্রোজেনেট অ্যালোপিসিয়া বলে।  বেশিরভাগ নারী এই সমস্যায় ভোগে। ছোট থেকে বড়  সবারই চুল পড়ার সমস্যা লক্ষণীয়। 

মহিলাদের চুল পড়া বন্ধ হওয়ার ৫টি সহজ উপায়

সুন্দর এবং মজবুত চুল আমাদের সবারই আকাঙ্ক্ষা। অতিরিক্ত চুল পরা সবার জন্যই চিন্তার বিষয়।নানা কারণে চুলের সমস্যা দেখা দেয়। চুলের সমস্যার সমাধান পেতে হলে অবশ্যই চুল পড়ার কারণ সম্পর্কে জানতে হবে। চুলের স্বাস্থ্য, চুল আঁচড়ানোর উপায়, চুলে যত্ন নেবার কৌশল ইত্যাদি বিষয় সম্পর্কে জানতে হবে।  চলুন সে সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক। 

পোষ্টের সূচিপত্র 

মহিলাদের চুল পড়া বন্ধে ব্যবহার করুন আলুর রস 

মেয়েদের চুল পড়া বন্ধে আলুর রস অনেক উপকারী। আলুর রস চুলে লাগিয়ে এক ঘন্টা অপেক্ষা করুন তারপর গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। আলুর রসকে আরো ফলদায়ক করতে আলুর রসের সাথে পেঁয়াজের রস এবং নারিকেল তেল মিশিয়ে ৩০ মিনিট মেসেজ করুন তারপর শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। চুল ধৌত করতে অবশ্যই শ্যাম্পু ব্যবহার করুন। এতে করে চুল পড়া কমবে চুল মজবুত হবে ও চুল দ্রুত বড় হবে। 

মেয়েদের চুল দ্রুত পেকে যাওয়া দূর করতে আলুর খোসা খুবই উপকারী। কিভাবে এটি ব্যবহার করতে হবে জেনে নিন ঃ প্রথমে কয়েকটি আলুর খোসা ছাড়িয়ে নিন এবং খোসাগুলো ঠান্ডা পানি দিয়ে ধৌত করে নিন। তারপর একটি পাত্রে পানি গরম দিন পানি গরম হলে তার ভিতরে আলুর খোসা গুলো ছেড়ে দিন। ১০ মিনিট ফোটন তারপরে পানিটি ছেঁকে নিন। সাবান শ্যাম্পু ব্যবহারের পর এই পানিটি দিয়ে চুল ধুয়ে নিন এতে করে দ্রুত চুল পেকে যাওয়া বন্ধ হবে। 

আলুর রসে ভিটামিন বি , সি এবং জিংক ও আয়রন সহ আরো অন্যান্য উপাদান মেলে। এটি চুলের পুষ্টি যোগায়, চুলের দ্রুত বৃদ্ধিতে সহায়তা করে,  চুল নরম ও সিল্কি করে , চুলের দ্রুত পেকে যাওয়া দূর করে। 
মেয়েদের চুল পড়া বন্ধে আলুর রস নারকেল তেল ও পেঁয়াজের রসের মিশ্রণের সাথে মধু ডিম ও অ্যালোভেরা মিশিয়ে এটিকে আরো শক্তিশালী মিশ্রণে রূপান্তর করা যায় যা চুলের জন্য আরও বেশি উপকারী। 

মহিলাদের চুল পড়া বন্ধে আমলকির রসের ব্যবহার

প্রাচীনকাল থেকেই চুলের যত্নে আমলকির ব্যবহার হয়ে আসছে। আমলকির রস চুলের বৃদ্ধি চুলের স্বাস্থ্য এবং চুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। যারা চুলের খুশকি ও চুল ভেঙে যাওয়ার সমস্যায় ভুগেন তাদের জন্য আমলকির রস খুবই উপকারী। আমলকির রস চুলের জন্য সবচেয়ে পুষ্টিকর একটি উপাদান। আমলকির রস কন্ডিশনার হিসেবে ব্যবহার করা যায় যা চুল সুন্দর ও মজবুত করে। মহিলাদের চুল পড়া বন্ধে আমলকির রসের ব্যবহারগুলি আলোচনা করা যাকঃ
  1. আমলকির রস ভিটামিন মিনারেল ও খনিজ পদার্থে ভরপুর। মহিলাদের চুল পেকে যাওয়ার সমস্যায় আমলকির রস বহুল ব্যবহৃত। চুলের স্বাস্থ্য বৃদ্ধিতে ও সৌন্দর্যে আমলকির রসের কোন বিকল্প নেই।
  2. আসুন তবে জেনে নিই মহিলাদের চুল পড়া বন্ধে আমলকির রসের ব্যবহার এবং এর গুনাগুন।
  3. আমলকির রসে ফাইটো নিউট্রিয়েন্ট নামক ভিটামিন উপস্থিত থাকে যা চুলের বৃদ্ধিতে অনেক কার্যকরী। এতে অনেক পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে যা প্রোটিন তৈরি করতে সাহায্য করে এবং চুল বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। আমলকির রস চুলে ক্লোজেন নামক প্রোটিন তৈরি করে যা চুলের মৃত কোষের পরিবর্তে নতুন কোষ প্রতিস্থাপন করে। 
  4. গোসলের পর আমলকির রস চুলে কন্ডিশনার হিসেবে ব্যবহার করা যায়। এতে করে চুল পুষ্ট ও মজবুত হয়। আমলকিতে ৮.১২ শতাংশ আদ্রতা থাকে যা তুলে জন্য অনেক উপকারী আবার আমলকির পাউডার ব্যবহার করে চুলের কন্ডিশনিং করা যায়। 
  5. খুশকির চিকিৎসায় আমলকির রস ব্যবহৃত হয় । আমলকিতে থাকা ভিটামিন সি চুলের শুষ্কতা দূর করে এবং খুশকি হতে বাধা প্রদান করে। আমলকির রসে থাকা অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি এবং অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল চুলের খুশকি ও চুলকানি বন্ধ করতে সাহায্য করে। 
  6. মাথার স্কেলপ  পরিষ্কার করতে আমলকির রস খুবই কার্যকরী। আমলকির রসে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট চুলকে ধুলাবালি ও দূষণের হাত থেকে রক্ষা করে। 
  7. চুলকে দ্রুত বৃদ্ধি করতে ও শক্তিশালী করতে আমলকির রস খুবই কার্যকরী। আমলকির রস চুলের গোড়াকে শক্তিশালী করে এবং চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। 
  8. আমলকির রস দিয়ে চুল ধৌত করলে চুল পড়া বন্ধ হবে অকালে চুল পাকা কমে যাবে একই সাথে শুকনা চুলে উজ্জ্বলতা ফিরে আসবে এবং মাথা ঠান্ডা হবে। আমলকি ৩০ মিনিট উঠিয়ে নিয়ে তারপর এটিকে ঠান্ডা করে সেই পানি দিয়ে মাথা ধৌত করলে এ ধরনের সমস্যার সমাধান হয়ে থাকে। 
  9. আদ্রতা চুলের গভীরে ধরে রাখতে আমলকির রসের সাথে নারিকেল তেল এবং অলিভ অয়েল মিশিয়ে নিন এতে করে চুলের আদ্রতা দীর্ঘ সময় টিকে থাকবে। 

মহিলাদের চুল পড়া বন্ধে পেঁয়াজের ব্যবহার 

মেয়েদের চুল পড়ার সমস্যা প্রতিটি ঘরে একটি প্রধান সমস্যা। গরমকালে চুল পড়ার সমস্যা বেশি দেখা যায়। গরমে মাথা ঘেমে চুল বেশি পড়ে যায় এক্ষেত্রে চুলের সঠিক যত্ন নিতে পারলে চুল পড়া বন্ধ হবে এবং চুল শক্তিশালী হবে, চুল দেখতে সুন্দর হবে। বেশিরভাগ মানুষ পার্লারে গিয়ে কিংবা বিভিন্ন কেমিক্যাল তুলে ব্যবহার করে এ ধরনের সমস্যা সমাধানের চেষ্টায় নিয়োজিত থাকেন তবে জেনে থাকবেন প্রাকৃতিক ভাবে যদি আপনি নিজের চুলের যত্ন নিতে পারেন তাহলে চুল ভালো থাকবে এবং ত্বকও ভালো থাকবে। 

কেমিক্যাল এর ব্যবহারে চুল পড়া বন্ধ হলেও কেমিক্যাল এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া অবশ্যই থাকে কিন্তু যদি আপনি প্রাকৃতিক উপায়ে চুলের যত্ন নেন তবে এটি দীর্ঘস্থায়ী হবে এবং পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হীন হবে।পেঁয়াজের রসে সালফার নামক একটি উপাদান থাকে যা কোলাজেন তৈরিতে বিশেষভাবে ভূমিকা পালন করে । কোলাজেন চুলের পুষ্টি যোগায় ও নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে। আসুন তবে জেনে নিই পেঁয়াজের রস কিভাবে কিভাবে ব্যবহার করা যায় এবং তা কিভাবে কার্যকরী হয়। 

 
এক চামচ পেঁয়াজের রস এক চামচ নারিকেল তেল ভালোভাবে মিশিয়ে চুলে ব্যবহার করলে চুল শক্ত মজবুত হবে। অবশ্যই এই মিশ্রণটি ব্যবহারের এক ঘন্টা পর শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে নিতে হবে। এতে করে চুল মসৃণ থাকবে। 

মহিলাদের চুল পড়া বন্ধ হওয়ার ৫টি সহজ উপায়

দুই চামচ নারিকেল তেল দুই চামচ মেথি দুই চামচ পেঁয়াজের রস ভালোভাবে মিশিয়ে পাঁচ মিনিট ফুটিয়ে তারপর তুলে ব্যবহার করলে চুল ঝলমলে উঠবে পাশাপাশি চুল মজবুত হবে এবং চুল পড়া বন্ধ হবে অবশ্যই মনে রাখতে হবে মিশ্রণটি ব্যবহারের এক ঘন্টা পর শ্যাম্পু দিয়ে ভালোভাবে চুল ধরে নিতে হবে। 

এক চামচ আমলকির রস তার সাথে এক চামচ পেঁয়াজের রস মিশিয়ে চুলের ব্যবহার করলে চুলের খুশকি দূর হয় এবং চুল সিল্কি হয়। এবারও মিশ্রণটি ব্যবহারের এক ঘন্টা পর চুল ভালোভাবে ধুয়ে নিন। 
সপ্তাহে অন্তত তিন থেকে চার দিন রাতে ঘুমানোর সময় পেঁয়াজের রস ও নারিকেল তেলের মিশ্রণটি মাথায় লাগিয়ে ঘুমিয়ে যান এবং সকালে উঠে শ্যাম্পু দিয়ে ফেলুন তারপর দেখুন আপনার অকালে চুল ঝরে যাওয়া নিমিষেই বন্ধ হয়ে যাবে। 

পেঁয়াজের রস চুলের গোড়া শক্ত করে এবং চুলের খুশকি দূর করে আদিকাল থেকেই মানুষ চুলের যত্নে এবং চিকিৎসায় পেঁয়াজের তেল এবং রস ব্যবহার করে আসছে। পেঁয়াজের রসের সাথে এলোভেরা মিশিয়ে ব্যবহার করলে চুলের ত্বক ভালো থাকে এবং চুল মসৃণ থাকে। 

উপরে বর্ণিত নিয়ম গুলো মেনে চলার পাশাপাশি আপনাকে আরো কিছু নেম মেনে চলতে হবে যেমন গোসলের সময় ঠান্ডা পানি দিয়ে মাথা ধৌত করা মাথায় কখনোই গরম পানি ব্যবহার না করা। মাথায় গরম পানি ব্যবহার করলে চুলের গোড়া দুর্বল হয়ে যায় এতে করে চুল পড়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।পাশাপাশি চুলের শ্যাম্পু করার আগে অবশ্যই চুলে তেল লাগিয়ে নিন এতে করে চুল ভালো থাকবে। 

মহিলাদের চুল পড়া বন্ধে মেথির তেলের উপকার এবং ব্যবহার

আদিকাল থেকেই চুলের যত্নে মেথি ব্যবহার হয়ে আসছে । ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চল , দক্ষিণ ইউরোপ এবং পশ্চিম এশিয়ায় মেথি পাওয়া যায়। মেথি শুধু চুল উজ্জ্বল ও মসৃণই করে না বরং চুলের গোড়া শক্ত করে ও চুল পড়া বন্ধ করে। গবেষণায় দেখা গেছে মেথিতে অনেক উপকারী উপাদান রয়েছে যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। মেথিতে ভিটামিন এ, থিয়ামিন , ফলিক অ্যাসিড, রাইবোফ্লাভিন , নিয়াসিন, ভিটামিন বি6 এবং ভিটামিন সি বিদ্যমান।  পাশাপাশি মেথির তেল ব্যবহার করে চুল পড়া বন্ধ হয় এবং চুলের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায়।  
 

নারী-পুরুষ সবারই চুল পড়া সমস্যা রয়েছে। মেথি এমন একটি প্রাকৃতিক উপাদান যা সত্যি চুল পড়া বন্ধে অভাবনীয় অবদান রাখে। মেথি হল একটি ঔষধি গাছ যে গাছের একবারে ফুল ও ফল হয় ।মেথিতে ভিটামিন এ ,বি  ,সি, কে , প্রোটিন , ক্যালসিয়াম  , ফসফেট ইত্যাদি উপকরণ বিদ্যমান।এছাড়াও মেথিতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট, ফলিক অ্যাসিড  বিদ্যমান যা চুল পড়া বন্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।তবে চলুন জেনে নেয়া যাক কিভাবে মেসির তেল ব্যবহার করতে হয় এবং কোন কোন ক্ষেত্রে সেটি কার্যকারী। 
  • খুশকির সমস্যার সমাধানে মেথির ব্যবহার ঃ যাদের খুশকি সমস্যা রয়েছে তাদের জন্য মেয়েটি খুবই উপকারী। শুষ্ক মাথা এবং মৃত ত্বক থেকে খুশকি উৎপন্ন হয়। একটি বাটিতে করে সারারাত মেথি ভিজিয়ে রাখুন এবং সকালে তার সাথে একটু দই মিশিয়ে নেতৃতা পেস্ট করে মিশ্রণটি মাথায় লাগিয়ে রাখুন । ৩০ মিনিট রেখে দেন তারপর শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন তারপর দেখবেন আপনার চুলের খুশকি দূর হয়ে যাবে।
  • চুল পড়া কমাতে মেথির ব্যবহার ঃ মেথির মধ্যে লেসিথিন নামক একটি উপাদান বিদ্যমান যা চুল ও মাথার ত্বকের আদ্রতা বজায় রাখে যা মাথার ত্বক শুষ্ক হয়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করে এবং চুল ঝরে যাওয়ার পরিমাণ কমায়। একই সাথে চুলের ত্বককে ভালো রাখে এবং চুলকে শক্তিশালী করে।
  • চুলের গোড়ায় সংক্রমণ রোধে মেথির ব্যবহার ঃ মেথিতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বিদ্যমান। মেথি চুলের প্রদাহ নাশক হিসেবে কাজ করে। মেথির পেস্ট ব্যবহার করে চুলের প্রদাহ রোধ করা সম্ভব। অনেকেই চুলের গোড়ায় সংক্রমণের কারণে সেখানে ব্যথা অনুভব করেন। মেথির পেস্ট ব্যবহারের মাধ্যমে এটি নিরাময় সম্ভব। 
  • চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে মেথির মিশ্রণের ব্যবহার এবং তা তৈরি করার উপায় ঃ এক কাপ নারিকেল তেলের মধ্যে এক টেবিল চামচ মেথি মিশিয়ে তা ভালো করে ফুটিয়ে নিন। মেসির রং যখন লাল হয়ে আসবে তখন গ্যাস বন্ধ করে দিন তারপর সেটি ঠান্ডা হওয়ার জন্য রেখে দিন। 
    যখন এটি ঠান্ডা হয়ে যাবে মিশ্রণটি একটি কাঁচের শিশিতে ঢেলে রাখুন এবং নিয়মিত ব্যবহার করুন এতে করে চুলের স্বাস্থ্য ভালো থাকবে এবং চুল পড়া বন্ধ হবে। 
  • হজমের সমস্যা ও কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে মেথি ঃ মেথি পেট ব্যথা , কোষ্ঠকাঠিন্য , তলপেট প্রদাহ ইত্যাদি সমস্যা সমাধান করে। মেথি ভেজানো পানি খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়। রক্তের কোলেস্টেরল কমাতে মেথি খুবই উপকারী। 
  • মেথি দিয়ে মাস্ক তৈরি করার নিয়ম এবং তা ব্যবহারে উপকারিতা ঃ রাতে দুই টেবিল চামচ মেথি এক কাপ পানিতে ভিজিয়ে রাখুন এবং সকাল হলে মেথি উঠিয়ে নিয়ে ভালোভাবে বেটে পেস্ট করে নিন। তার ভেতর এক টেবিল চামচ লেবুর রস দিয়ে দিন তারপর সেটিকে ভালোভাবে মিশিয়ে ব্যবহার করুন দেখবেন এতে করে চুলের খুশকি দূর হবে, চুলার স্বাস্থ্য ভালো থাকবে , চুল শক্তিশালী হবে এবং মসৃণ হবে। 

মহিলাদের চুল পড়া বন্ধে এলোভেরার ব্যবহার 

অ্যালোভেরা হলো একটি বহুজীবী ভেষজ উদ্ভিদ যেটি অনেকটা আনারস গাছের মতো দেখতে এবং যার পাতার দুপাশে বরাতের মতো কাটা থাকে এবং ভিতরে জেলের মতো পিচ্ছিল অংশ ধরে। মানব জীবনের বিভিন্ন চিকিৎসায় এটি ব্যবহৃত হয়। এছাড়াও চুলের সমস্যার সমাধানে এটি খুবই উপকারী।চুলের পরিচর্যায় আদিকাল থেকে এটি ব্যবহার হয়ে আসছে।

মহিলাদের চুল পড়া বন্ধ হওয়ার ৫টি সহজ উপায়

অ্যালোভেরাতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ ভিটামিন সি ভিটামিন বি ভিটামিন এফ এবং ফলিক এসিড বিদ্যমান। এগুলো উপাদান মেয়েদের চুল পড়া বন্ধের অসাধারণ ভূমিকা পালন করে একই সাথে চুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে এবং চুলের গোড়া শক্ত করে। এবার তাহলে জেনে নিন কিভাবে চুলে এলোভেরা ব্যবহার করবেন এবং তার ব্যবহারের কার্যকারিতা।
  • মধু ,নারিকেল ও অ্যালোভেরা মিশ্রণঃ এক টেবিল চামচ মধু, ২ টেবিল চামচ নারিকেল তেল সাথে ২ টেবিল চামচ এলোভেরা জেল দিয়ে সেটিকে ভালোভাবে মেশান। এটি একটি খুবই কার্যকরী মিশ্রণ তৈরি হলো যেটি আপনার চুল পড়া বন্ধের অভাবনীয় ভূমিকা রাখবে। গোসলের আগে মিশ্রণটি মাথায় লাগিয়ে রাখুন 30 মিনিট পর সেটি ধুয়ে ফেলুন দেখবেন আপনার চুল উজ্জ্বল হয়ে উঠবে এবং চুলের খুশকি দূর হবে। 
  • টক দই ও অ্যালোভেরার মিশ্রণঃ দুই চামচ টক দের সাথে এক টেবিল চামচ এলোভেরা মিশিয়ে নিন । মিশ্রণটিকে মাথায় ভালোভাবে মেসেজ করুন এবং ৩০ মিনিট রেখে দিন তারপর শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন এতে করে চুলের খুশকি দূর হবে এবং চুল উজ্জ্বল হবে। 
  • ডিম , এলোভেরা ও অলিভ অয়েল এর ব্যাক তৈরির নিয়ম ঃ ডিমের কুসুমের সাথে দুই চামচ এলোভেরা এবং এক টেবিল চামচ অলিভ অয়েল ভালোভাবে মিশিয়ে নিন, এই প্যাকটি চুলের জন্য অত্যন্ত উপকারী। প্রতিদিন রাতে মিশ্রণটি লাগিয়ে রাখুন এবং সকালে উঠে ধরে ফেলুন এতে করে আপনার চুলের পরিবর্তন আপনি নিজেই লক্ষ্য করতে পারবেন। 
  • মাথার তক জীবনমুক্ত রাখতে অ্যালোভেরা , মধু , আপেল সিডার ভিনেগার , ল্যাভেন্ডার এসেন্সিয়াল অয়েল  এর মিশ্রণ তৈরি করার উপায় ঃ প্রথমে একটা বাটিতে চার টেবিল চামচ মধু নিন এর সাথে সমপরিমাণ আপেল সিডার ভিনেগার মেশান। এরপর এর সাথে আধা কাপ এলোভেরা জেল মিশিয়ে মিশ্রণটি ভালো করে ব্লেন্ড করে নিন তারপর কয়েক ফোটা ল্যাভেন্ডার এসেন্সিয়াল অয়েল মেশান।এটি অসাধারণ একটি মিশ্রণ তৈরি হয়ে গেল যা আপনি শ্যামপুর পরিবর্তে ব্যবহার করতে পারবেন। চুল ভালোভাবে ভিজিয়ে মিশ্রণটি শ্যাম্পুর মতো করে ব্যবহার করুন এটি নিয়মিত ব্যবহারের ফলে তবে জীবাণু দূর হবে পাশাপাশি চুল উজ্জ্বল ও শক্তিশালী হবে। 
  • অ্যালোভেরা জেল ও ভেজিটেবল অয়েল এর মিশ্রণ এর মিশ্রণ তৈরি করার উপায় ও অপকারিতা ঃ প্রথমে একটি কাপে এলোভেরা জেল নিয়ে নিন এবং তার সাথে চার গুণ সমপরিমাণ ভেজিটেবল ওয়েল মিক্স করুন তারপর মিশ্রণটি দশ মিনিট ফুটিয়ে নিন । মিশ্রণটি ঠান্ডা হওয়ার পর এটি ব্যবহার করুন। এটি নিয়ে হয়তো ব্যবহারের ফলে চুলের খুশকি দূর হবে এবং চুল পড়া কমে যাবে। 
  • অ্যালোভেরা , নারকেল তেল এবং লেবুর রসের মিশ্রণ তৈরি করার উপায় ও অপকারিতা ঃ প্রথমে একটি কাপে এক চামচ এলোভেরা জেলের তার সাথে এক চামচ লেবুর রস ও তিন চামচ নারিকেল তেল মিশিয়ে নিন। এটি একটি অসাধারণ মিশ্রণ তৈরি হল যা নিয়মিত চুলের গোড়ায় ব্যবহারের ফলে চুল পড়া বন্ধ হবে ও নতুন চুল গজাতে সাহায্য করবে। 

শেষ কথা

উপরিউক্ত আলোচনায় চুল পড়া বন্ধের পাঁচটি সহজ উপায় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে যা খুবই ফলদায়ক। এখানে চুল পড়া বন্ধে প্রাকৃতিক চিকিৎসার বিশদ আলোচনা করা হয়েছে। 
উপরে বর্ণিত তথ্যে চুল পড়া বন্ধ হওয়ার উপায় এবং উপকরণের সহজ ব্যবহার বর্ণিত হয়েছে যা আপনি সহজেই করে বুঝতে পারবেন এবং ব্যবহার করতে পারবেন। উপরে বর্ণিত নিয়মাবলী সঠিকভাবে পালন করলে তার শতভাগ কার্যকরী হবে। 



এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

টপ ট্রিক্সস্‌ আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। সব কমেন্টস রিভিউ করা হয়, ধন্যবাদ।;

comment url