মালয়েশিয়ার শিল্প খাতে বিশেষ করে উৎপাদন ও ফ্যাক্টরি খাতে ব্যাপক শ্রমশক্তির
প্রয়োজন পরে। আর এই চাহিদা মেটানোর জন্য মালয়েশিয়া সরকার
প্রতিবছর বিপুল সংখ্যক বিদেশী কর্মী নিয়োগ করে থাকে। যাদের মধ্যে
বাংলাদেশসহ বিভিন্ন উন্নয়নশীল দেশের শ্রমিকদের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য। আজকের
আলোচনায় দেখবেন মালয়েশিয়ার ফ্যাক্টরি ভিসা প্রক্রিয়া ও বেতন কত।
পোষ্টের সূচিপত্র
মালয়েশিয়ার ফ্যাক্টরি ভিসা বেছে নেওয়ার সুবিধা
গুলো জানুন
মালয়েশিয়ার ফ্যাক্টরি ভিসা হচ্ছে এক ধরনের বিশেষ কর্মসংস্থান ভিসা
বিদেশি কর্মীদের মালয়েশিয়ার ফ্যাক্টরি বা উদ্বোধন ঘাতে কাজ করার অনুমতি
দিয়ে থাকে মালয়েশিয়া সরকার। এই ভিসা প্রক্রিয়াটি কর্মী নির্বাচনের প্রাথমিক
ধাপ থেকে শুরু করে মালয়েশিয়া কর্মী পৌঁছানো পর্যন্ত বিভিন্ন ধাপের মধ্য দিয়ে
সম্পন্ন করতে হয়। এই প্রক্রিয়ার প্রতিটি ধাপেই গুরুত্বপূর্ণ । এবং
কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম কানুন এর মধ্যে দিয়ে এই ভিসা প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করতে
হয়।
মালয়েশিয়ার ফ্যাক্টরি ভিসা প্রক্রিয়া একটু জটিল ও বহু ধাপের প্রক্রিয়া হলেও
যদি সফলভাবে এটি সম্পূর্ণ করা যায় তাহলে তা বিদেশি শ্রমিকদের জন্য
একটি উল্লেখযোগ্য সুযোগ হয়ে থাকে। ২০২৪ সালে মালয়েশিয়ার ফ্যাক্টরি শ্রমিকদের
বেতন কাঠামো ও অন্যান্য সুবিধা তাদের জন্য আকর্ষণীয় হবে বলে আশা করা
যায়। কেননা মালয়েশিয়ার অর্থনীতি ও শিল্প খাতের উন্নতির সাথে সাথে
এদেশের প্রতি বিদেশী কর্মীদের আগ্রহ দিনকে দিন বেড়ে চলেছে।
তাছাড়া বর্তমানে ফ্যাক্টরি ভিসায়মালয়েশিয়া যেতে পারলে অনেক বেশি
সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যাচ্ছে।কেননা ফ্যাক্টরির কাজের বেতন অন্যান্য কাজের
তুলনায় বেশি হয়ে থাকে। এছাড়াও কোম্পানি কর্মীদের থাকার ব্যবস্থা করে দেয়
এবং আনুষঙ্গিক খরচও বহন করে থাকে কোম্পানিগুলো। আবার এখানে ফ্যাক্টরি
ভিসা নিয়ে কাজ করার পাশাপাশি চাইলে মালিকের অনুমতি নিয়ে আপনি বাইরের কাজ করার
সুযোগ থাকবেন। এত সুযোগ-সুবিধা থাকার কারণে বাংলাদেশি শ্রমিকদের বর্তমানে
ফ্যাক্টরি ভিসা নিয়ে মালয়েশিয়ার ফ্যাক্টরিতে কাজ করা উচিত।
মালয়েশিয়ার ফ্যাক্টরি ভিসা প্রক্রিয়া ২০২৪
মালয়েশিয়ার ফ্যাক্টরি ভিসা প্রক্রিয়া বিদেশি শ্রমিকদের জন্য নির্দিষ্ট এবং
অবধারিত একটি পদ্ধতি। এই প্রক্রিয়াটি কয়েকটি ধাপে সম্পন্ন করা হয়ে
থাকে। এবং এই প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করার জন্য প্রয়োজনীয় নথিপত্রসহ
স্বাস্থ্যপরীক্ষা ও প্রশাসনিক প্রক্রিয়া মধ্য দিয়ে সম্পন্ন করতে হয়। কিভাবে
মালয়েশিয়ার ভিসা প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করবেন তার বিস্তারিত নিচের
আলোচনায় করা যাক ঃ
কর্মী নির্ধারণ
কর্মী নির্ধারণ হল মালয়েশিয়ার ফ্যাক্টরি ভিসা প্রক্রিয়ার
গুরুত্বপূর্ণ একটি ধাপ। মালয়েশিয়ার কোম্পানিগুলো প্রতিবছর স্থানীয়
ও আন্তর্জাতিকভাবে কর্মী নিয়োগ এজেন্সির মাধ্যমে কর্মী নির্বাচন করে
থাকেন। আর এই প্রক্রিয়ায় শুরু হয় প্রার্থী সংগ্রহের মধ্যে
দিয়ে। যেখানে বিভিন্ন সূত্রের মাধ্যমে প্রাচীর জীবন বৃত্তান্ত সংগ্রহ করা
হয়। তারপর প্রাথমিকভাবে বাছাই করা হয়। কর্মী বাছায়ে নির্বাচিত হলে
সাক্ষাতের জন্য যোগাযোগ করতে বলা হয়।
চুক্তিসাক্ষর
কোন কর্মী যদি প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত হয়ে থাকে তাহলে মালয়েশিয়া
নিয়োগকর্তারা নির্বাচিত প্রার্থীর সাথে চুক্তি স্বাক্ষর করে থাকে। এই
চুক্তিতে কাজের শর্তাবলী বেতন , শ্রমিকের কর্মঘন্টা ,বাসস্থান ও অন্যান্য সুযোগ
সুবিধা উল্লেখ করে দেয়া থাকে। স্বাক্ষরের পর কর্মী এবং নিয়োগ কর্তা উভয়
চুক্তির শর্তাবলী মেনে চলতে বাধ্য থাকে
ভিসার জন্য আবেদন
নিয়োগকর্তার সাথে যদি কোন কর্মীর চুক্তিস্বাক্ষর সম্পূর্ণ হয়ে যায় তার
পরবর্তী ধাপে বাছাইকৃত সেই কর্মী ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবে। মালয়েশিয়ার
ফ্যাক্টরির ভিসার জন্য আবেদন করার প্রক্রিয়াটি নিয়োগ কর্তার মাধ্যমে সম্পন্ন
করতে হয়। এবং এই আবেদন করার জন্য কিছু কাগজপত্রের প্রয়োজন
হয়। যেমনঃ
-
পাসপোর্টের কপি ঃ কর্মীর পাসপোর্ট বৈধতার মেয়াদ
কমপক্ষে ছয় মাস থাকতে হবে।
-
ছবি ঃ নির্দিষ্ট মাপ ও শর্তাবলী অনুযায়ী কর্মীর চার কপি
রঙিন ছবি লাগবে।
-
মেডিকেল রিপোর্টঃ প্রাথমিকভাবে কর্মী বাছায়ের পর কর্মী
শারীরিক ভাবে সুস্থ আছে কিনা তার প্রমাণ স্বরুপ মেডিকেল রিপোর্ট জমা
দিতে হয়।
-
চুক্তির কপিঃ নিয়োগ কর্তা ও কর্মীর মধ্যে যে চুক্তি সম্পাদন
হয়েছে তা আবেদনের সময় জমা দিতে হয়।
-
পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেটঃ বাছাইকৃত কর্মীর কোন অসামাজিক
কার্যকলাপ রেকর্ড আছে কি নেই তার প্রমাণস্বরূপ পুলিশ ক্লিয়ারেন্স
সার্টিফিকেট আবেদনের সময় জমা দিতে হয়।
ভিসার অনুমোদন
কর্মী তার ভিসার আবেদন জমা দেয়ার পর মালেশিয়ার ইমিগ্রেশন দপ্তর
আবেদনটি পর্যালোচনা করবে এবং প্রয়োজনীয় যাচাই-বাছাই সম্পূর্ণ
করবে। ভিসার অনুমোদন এই প্রক্রিয়াটি সময়ের ব্যাপার কেননা ইমিগ্রেশন
দপ্তর কর্মীর যোগ্যতা এবং নথিপথের যথার্থ যাচাই-বাছাই করে থাকে। আর এই ভিসা
অনুমোদনের পর কর্মীকে একটি ই ভিসা ইসু করা হয় যা তিনি মালয়েশিয়া প্রবেশের
জন্য ব্যবহার করতে পারবেন।
মেডিকেল রিপোর্ট
প্রাথমিকভাবে কর্মী বাছের পর কর্মী শারীরিক ভাবে সুস্থ আছে কিনা তার
প্রমাণ স্বরুপ মেডিকেল রিপোর্ট জমা দিতে হয়। এক্ষেত্রে কর্মীর সাধারণ
শারীরিক অবস্থা মূল্যায়ন করা হয়। রক্ত পরীক্ষা করা হয় এবং ফুসফুস ও হার্টের
অবস্থা যাচাই করার জন্য এক্সরে করা হয়।
ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া ও কাজের অনুমতি
মেডিকেল পরীক্ষা সফলভাবে সম্পন্ন করার পর কর্মীকে মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশন
দপ্তরে যাবতীয় নথিভুত্র জমা দিতে বলা হয়। এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে কর্মীকে
একটি ওয়ার্ক পারমিট ইস্যু করা হয় যা তাকে মালয়েশিয়ার ফ্যাক্টরি হাতে কাজ
করার অনুমতি দেয়। এই ওয়ার্ক পারমিট সাধারণত নির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য প্রদান
করা হয় এবং প্রয়োজন অনুযায়ী তা নবায়ন করা সুযোগ থাকে।
কোম্পানি কর্তৃক বাসস্থান ও অন্যান্য সুবিধা
মালয়েশিয়ার ফ্যাক্টরি ভিসার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হল কর্মীর বাসস্থান
এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা গুলি নিয়োগকর্তা কর্তৃক নির্ধারণ
হয়ে থাকে। কোম্পানিগুলো নিজস্ব হোস্টেল বা বাসা ভাড়া করে তাদের
কর্মীদের জন্য। এমনকি বাসস্থানের সাথে কর্মীদের খাবারের ব্যবস্থা
,পরিবহন সুবিধা এমনকি চিকিৎসার মত সুবিধা দিয়ে থাকে।
কাজের শর্তাবলী ও নিরাপত্তা
মালেশিয়ার ফ্যাক্টরি খাতে কাজ করার জন্য কর্মীদের কোম্পানির নির্দিষ্ট
শর্তাবলী মেনে চলতে হয়। সাধারণত ৮ ঘন্টা কাজের সময় এবং সপ্তাহে ৬ দিন
কাজ করতে হয়। কর্মীদের ওভারটাইমের জন্য আলাদাভাবে বেতন প্রদান করা
হয়। এবং কর্মীদের নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়ে
থাকে।
মালয়েশিয়ার ফ্যাক্টরি ভিসার জন্য আবেদন করবেন যেভাবে
মালয়েশিয়ার ফ্যাক্টরি বিচার জন্য আবেদন প্রোগ্রামের কয়েকটি ধাপে সম্পূর্ণ
হয়। প্রতিটি ধাপই অনেক গুরুত্বপূর্ণ এবং সঠিকভাবে সম্পন্ন করার প্রয়োজন
পড়ি। চলুন কিভাবে মালয়েশিয়া ফ্যাক্টরির জন্য আবেদন করবেন তা আলোচনা
করি ঃ
-
মালয়েশিয়ার ফ্যাক্টরি ভিসার আবেদনের জন্য প্রথমে আপনাকে বিএমইটি সাইটে
গিয়ে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। আপনি চাইলে গুগল প্লে স্টোর থেকে
প্রবাসী অ্যাপটি ডাউনলোড এর মাধ্যমে বিএমইটির রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন।
-
সরকারিভাবে মালয়েশিয়া যেতে না পারলে আপনি কোন বিশ্বস্ত এজেন্সির
সাথে যোগাযোগ করার মাধ্যমে আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারবেন।
-
এজেন্সি খুঁজে পাওয়ার পর সেখানে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিয়ে
মালয়েশিয়ারি ফ্যাক্টরি ভিসার আবেদন ফরম ডাউনলোড করে সেটি সঠিকভাবে পূরণ
করে জমা দিতে হবে।
-
এজেন্সি গুলো স্পেশাল ট্রেনিং এর মাধ্যমে আপনাকে পরিপূর্ণ করে তুলবে।
-
সর্বশেষ ভিসার আপডেট জেনে ভিসার জন্য আবেদন করবেন কেননা যেকোনো
সময় ফ্যাক্টরি ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র এবং আবেদন
প্রক্রিয়ার পরিবর্তনও আসতে পারে।
মালয়েশিয়ার ফ্যাক্টরি ভিসার শ্রমিকদের বেতন কাঠামো ২০২৪
মালয়েশিয়ার অর্থনীতির উন্নয়নের অন্যতম প্রধান উৎস হল এই উৎপাদন খাত যা
ফ্যাক্টরি শ্রমিকদের উপর নির্ভরশীল। ফ্যাক্টরির শ্রমিকদের বেতন
কাঠামো নির্ধারিত হয় বিভিন্ন ফ্যাক্টরির কাজের ধরন অভিজ্ঞতা কোম্পানির অবস্থা
ও সরকারের নীতিমালার উপর ভিত্তি করে। নিচে মালয়েশিয়ার
ফ্যাক্টরি ভিসার শ্রমিকদের বেতন কাঠামো কেমন তা আলোচনার মধ্য
দিয়ে ব্যাখ্যা করা যাক ঃ
মালয়েশিয়ার ফ্যাক্টরের বিচার শ্রমিকদেরকে সাধারণত দুই ভাগে বিচার করা হয়ে
থাকে ১। নতুন পর্যায়ের কর্মী ২। অভিজ্ঞ কর্মী ।
-
নতুন পর্যায়ের কর্মীঃ মালয়েশিয়ার ফ্যাক্টরি ভিসার
শ্রমিকদের নতুন পর্যায়ে সাধারণত ১২০০ থেকে ১৫০০ মালয়েশিয়ান রিংগিত
প্রদান করা হয়ে থাকে। ২০২৪ সালে বর্তমান এই সময়ে ১ রিংগিত
বাংলাদেশের ২৫ টাকার সমান। এই বেতন কাঠামো সাধারণত কোম্পানির অবস্থা ও
শ্রমিকদের কাজের ধরন অনুযায়ী হতে পারে।
-
অভিজ্ঞ কর্মী ঃ পৃথিবী জুড়ে অভিজ্ঞতার মূল্য
অনেক। পৃথিবীর সব প্রান্তে অভিজ্ঞতা কে বেশি মূল্যায়ন করা হয়ে
থাকে। আরে অভিজ্ঞতা অর্জনের ফলে একজন মালয়েশিয়া
ফ্যাক্টরি ভিসার শ্রমিক ১৬০০ থেকে ২২০০ বা তারও বেশি মাসিক
রিংগিত পেয়ে থাকে।
মালয়েশিয়ার ফ্যাক্টরি ভিসার অন্যতম সুবিধা হল ওভারটাইম ডিউটি করার মাধ্যমে
অতিরিক্ত টাকা আয় করা সম্ভব হয়। ওভারটাইম কাজের ফলে অতিরিক্ত কত টাকা আয়
করা যায় চলুন তা দেখি;
-
নিয়মিত ওভারটাইমঃ মালয়েশিয়ার শ্রমাইন অনুযায়ী সেখানে
কর্মরত প্রত্যেক কর্মীর ওভারটাইম কাজের জন্য ঘণ্টাপতির বেতনের ১.৫ গুণ
অর্থপ্রদান করে থাকে বা করতে বাধ্য থাকে কোম্পানিগুলো।
-
ছুটির দিনে ওভারটাইমঃ মালয়েশিয়ার ফ্যাক্টরি ভিসা শ্রমিকরা
ছুটির দিনে ওভারটাইম কাজ করে সাধারণত দুই গুণ বা তারও বেশি
রিংগিত উপার্জন করতে সক্ষম হয়। কেননা সেখানকার একটি
নির্দিষ্ট শ্রম আইন রয়েছে। এবং কোম্পানিগুলোকে সেই আইন
অনুযায়ী শ্রমিককে তার ওভারটাইম কাজের জন্য অর্থ প্রদান করে থাকে।
প্রয়োজনীয় সুযোগ সুবিধা প্রদানঃ মালয়েশিয়ার অনেক ফ্যাক্টরি
কোম্পানি তাদের শ্রমিকদের জন্য খাবারের ভাতা প্রদান করে
থাকেন। প্রতিদিনের খাবারের খরচ মেটানোর জন্য এই ভাতা প্রদান করা হয়ে
থাকে। এছাড়া শ্রমিকদের কাজের জায়গায় যাতায়াতের জন্য পরিবহন ভাতা
প্রদান করে থাকে কোম্পানিগুলো। তাছাড়া অনেক কোম্পানি যাদের
শ্রমিকদের জন্য হোস্টেল কিংবা বাসা ভাড়া নিয়ে থাকে। তাছাড়া মালেশিয়ার
ফ্যাক্টরি কোম্পানিগুলো শ্রমিকদের প্রাথমিক চিকিৎসার সুযোগ সুবিধা প্রদান করে
থাকে। অনেক কোম্পানি তাদের শ্রমিকদের স্বাস্থ্যবীমা ও চিকিৎসা খরচ মেটানোর
ব্যবস্থা করে থাকে।
বার্ষিক বোনাসঃ অনেক কোম্পানির শ্রমিকদের বাৎসরিক
পারফরমেন্সের উপর নির্ভর করে বোনাস প্রদান করে থাকে। এই বোনাস কর্মীদের
পারফরমেন্সের উপর নির্ভর করে এবং এর পরিমাণ সাধারণত এক মাসের বেতনের সমান হতে
পারে। এছাড়া কোম্পানিগুলো বিভিন্ন উৎসব উপলক্ষে উৎসব বোনাস প্রদান
করে থাকে।
বেতন কাঠামোর উদাহরণঃ
- প্রাথমিক বেতনঃ ১৪০০ রিংগিত (৩৪৮৫৫ টাকা)
-
ওভারটাইম বেতন ঃ ৩০০ রিংগিত ডিউটি টাইম ২০ ঘন্টা
(৭৪৬৮ টাকা)
- খাবারের ভাতা ঃ ২০০ রিংগিত ( ৪৯৭৯ টাকা)
- পরিবহন ভাতাঃ ১০০ রিংগিত (২৪৮৯ টাকা)
- চিকিৎসা ভাতাঃ ১০০ রিংগিত (২৪৮৯ টাকা)
-
মোট বার্ষিক বেতন ঃ ২১০০ রিংগিত ( ৫২২৮২ টাকা)
এছাড়াও প্রতি বছর পর্যন্ত মালয়েশিয়ার ফ্যাক্টরি শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধি
পায় যা ৫% থেকে ১০% পর্যন্ত হতে পারে। শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধি
শ্রমিকের কাজের পারফরম্যান্স অভিজ্ঞতা ও কোম্পানির মুনাফার উপর নির্ভর করে
থাকে।
তাছাড়া মালেশিয়ার ফ্যাক্টরি শ্রমিকদের বেতন কাঠামোতে বৈচিত্র নির্ভর
করে সেইখানকার বিভিন্ন ফ্যাক্টরির ওপর। ইলেকট্রনিক্স শিল্প
মালয়েশিয়ার অন্যতম প্রধান খাত হাওয়ায় এই খাতে দক্ষতার প্রয়োজন
পড়ে এবং শ্রমিকদের প্রযুক্তিগত জ্ঞান থাকারও প্রয়োজন হয় সে কারণে
ইলেকট্রনিক্স খাতে শ্রমিকদের বেতন সাধারণত অন্য খাতের শ্রমিকদের তুলনায়
বেশি হয়। আবার টেক্সটাইল শিল্পে শ্রমিকদের বেতন সাধারণত অন্য
শিল্পের তুলনায় কিছুটা কম হতে পারে। সাধারণত শ্রমিকদের শারীরিক শ্রমের
প্রয়োজন পড়ে এবং দক্ষতা অপকারিত কম প্রয়োজন হয়।
এছাড়াও কুয়ালালামপুর ও অন্যান্য বড় শহরগুলোতে জীবিকার খরচ অন্যান্য ছোট শহর
ও গ্রামে এলাকার চেয়ে বেশি হওয়ায় শ্রমিকদের বেতন তুলনামূলক বেশি হয়। এই
শহরগুলোতে শ্রমিকরা বাসস্থান ,পরিবহন এবং অন্যান্য সুযোগ সুবিধা বেশি
পেয়ে থাকে ছোট শহরে শ্রমিকদের তুলনায়।
মালয়েশিয়ার ফ্যাক্টরি ভিসার জন্য কত টাকা খরচ হয় ২০২৪
মালয়েশিয়া ফ্যাক্টরি ভিসার জন্য খরচ নির্ভর করে সেখানকার বিভিন্ন
ফ্যাক্টরির ভিসার ধরনের ওপর নিয়োগকর্তা , এজেন্সি ,স্বাস্থ্য
পরীক্ষা ও অন্যান্য প্রশাসনিক খরচের ওপর। নিচে মালয়েশিয়ার ফ্যাক্টরি
ভিসার জন্য একটি আনুমানিক খরচের বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরা হলো ঃ
- ভিসা আবেদন ফিঃ ১২০০-২৪৯০ টাকা
- এজেন্সি ফিঃ ১৭০০০০-২৮০০০০০ টাকা
- স্বাস্থ্য পরীক্ষা ফিঃ ৩৭০০-৭৪০০
-
পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট ফিঃ ১২০০-২৪৯০ টাকা
-
পাসপোর্ট ও অন্যান্য কাগজপত্র প্রস্তুতি ফি ঃ ৪৯০০-৯৯০০ টাকা
- বিমান ভাড়া ঃ ৩৩৬০০-৬৭২০০
- প্রশাসনিক খরচ ঃ ১২০০-৪৯০০ টাকা
-
প্রশিক্ষণ ও ওয়ারেন্টেশন ফি ঃ ৪৯০০-১২৪০০ টাকা
- মোট আনুমানিক খরচঃ ২১৯০০০-৩৮৭০০০০ টাকা
শেষ কথা
বিদেশে কাজ করার সুযোগ যেমন একজন শ্রমিকের জীবনে অর্থনৈতিক
উন্নয়নের উন্নতি ঘটায় ঠিক তেমনি তা তার জীবনের উন্নয়নের জন্য বিশাল
সুযোগ বয়ে নিয়ে আসে। মালয়েশিয়ার ফ্যাক্টরি ভিসা প্রক্রিয়া এবং এর সাথে
সম্পর্কিত খরচ সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা রাখলে কর্মীরা আরও সুষ্ঠুভাবে এবং
নির্ভুল ভাবে তাদের আবেদন প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করে অনায়াসে মালয়েশিয়ার
ফ্যাক্টরি ভিসা নিয়ে ফ্যাক্টরিতে কাজ করতে পারবে।
মালেশিয়ার ফ্যাক্টরি ভিসার জন্য প্রয়োজনে খরচ এবং ভিসা প্রক্রিয়া ২০২৪ সালে
আরো সুনির্দিষ্ট এবং জটিল হয়ে উঠতে পারে। কর্মীদের কাছে
পরামর্শ থাকবে যে, তারা যেন নির্ভরযোগ্য এবং বৈধ এজেন্সির মাধ্যমে ভিসা
প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করে এবং প্রতিটি ধাপের খরচ সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা
রাখে। এ ধরনের প্রস্তুতি নিশ্চিত করবে যে ভিসা প্রক্রিয়ায় কোন ধরনের
অপ্রত্যাশিত সমস্যার সম্মুখীন হতে হবেনা এবং প্রার্থীরা সহজে
স্বাচ্ছন্দ্যের মালয়েশিয়া তাদের নতুন কর্মজীবন শুরু করতে পারবে।
টপ ট্রিক্সস্ আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। সব কমেন্টস রিভিউ করা হয়, ধন্যবাদ।;
comment url