চিরতরে গ্যাস্ট্রিক দূর করার প্রাকৃতিক ৫টি কার্যকরী উপাদান

চিরতরে গ্যাস্ট্রিক দূর করার প্রাকৃতিক উপায় আমরা সবাই খুজে থাকি কিন্তু সঠিক নিয়মাবলী এবং প্রাকৃতিক উপাদান সমূহ সম্পর্কে না জানার কারণে আমরা এ সমস্যা নিরাময় করতে ব্যর্থ হই।গ্যাস্ট্রিক একটি অতি পরিচিত সমস্যা। এমন লোক খুব কম দেখা যায় যাদের গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা নাই।
চিরতরে গ্যাস্ট্রিক দূর করার প্রাকৃতিক ৫টি কার্যকরী উপায় জানুন

আমরা বাঙালি জাতি খুব বেশি ভোজন রসিক হওয়ায় এ জাতির ক্ষেত্রে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা বেশি লক্ষণীয়। তাছাড়া অতিরিক্ত তেল জাতীয় খাবার ও মসলা জাতীয় খাবারের সাথে আমরা অভ্যস্ত কিন্তু এ সকল খাবার গ্যাস্ট্রিক তৈরির প্রধান কারণ। চলুন আজ আমরা চিরতরে গ্যাস্ট্রিক দূর করার প্রাকৃতিক ৫টি কার্যকরী উপায় এবং উপাদানগুলো সম্পর্কে জানব।

পোষ্টের সূচিপত্রঃ 

চিরতরে গ্যাস্ট্রিক দূর করতে কিসমিসের ব্যবহার

আমরা এটা ভুলে গেছি যে প্রাকৃতিক উপায়ে গ্যাস্ট্রিক নিরাময় সম্ভব এবং তা স্বাস্থ্যকর। আমরা ঔষুধের উপর এতটাই নির্ভরশীল যে প্রাকৃতিকভাবে গ্যাস নিরাময়ের চেষ্টা করে দেখি না কিন্তু একসময় মানুষ প্রাকৃতিক উপায় সকল সমস্যার সমাধান করে থাকতো এবং তারা দীর্ঘদিন সুস্থ থাকতো। গ্যাস্ট্রিক রোগ নিরাময় অন্যতম একটি উপাদান হলো কিসমিস।

যারা প্রায়ই গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় ভুগেন তারা কিসমিস ব্যবহারে তাৎক্ষণিক সুবিধা পেতে পারেন। একটি কাপে কিসমিস ভিজিয়ে রেখে তারপর প্রতিদিন খালি পেটে ভেজানো কিসমিস খেলে এসিডিটি কমে আসবে। কিসমিসের পানি পেটের জন্য খুবই উপকারী এতে অধিক পরিমাণে এন্টি ইনফ্লেমেটরি থাকে যা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যার সমাধান করে থাকে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে কিসমিস।

গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা সমাধানে অধিকাংশ মানুষ ঔষধের উপর নির্ভর হয়ে পড়েন। আবার অনেকাংশে অধিকাংশ মানুষ ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়াই বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ঔষধ সেবন করে থাকেন যা শরীরের জন্য খুবই ক্ষতিকর। বুক জ্বালা , হজম না হওয়া ইত্যাদি সমস্যা সমাধান করবে কিসমিস। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে খালি পেটে ভিজিয়ে রাখা কিসমিস খেলে উচ্চ রক্তচাপ দূর হয় একই সাথে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়।

কিসমিসের পানি কোষ্ঠকাঠিন্যের জন্য একটি অন্যতম ঔষধ হিসেবে প্রমাণিত এতে অধিক পরিমাণে 
ফাইবার এবং রেচক রয়েছে যা কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিকারের দীর্ঘস্থায়ী সমাধান। কিসমিস রক্ত পরিষ্কার করে এবং কিডনিকে ভালো রাখে।বর্তমানে এই দূষণযুক্ত পৃথিবীতে এমনিতেই আমরা ভেজাল যুক্ত খাবার খেয়ে থাকি এবং দূষিত বাতাসে নিঃশ্বাস নিয়ে থাকে যা আমাদের  আয়ু কালকে এমনি কমিয়ে দিচ্ছে তারপর আবার এসকল দূষণের কারণে আমাদের শারীরিক ছোটখাটো সমস্যায় আমরা ওষুধের ব্যবহার করে থাকছি যার পর্যাপ্ত পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে।

তাই আমাদেরকে এ সকল কেমিক্যাল এর ব্যবহার থেকে বের হয়ে শারীরিক ছোটখাটো সমস্যায় প্রাকৃতিক উপায় বেছে নিতে হবে। গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা সমাধানের এমন প্রাকৃতিক রয়েছে যা চিরতরে গ্যাস্ট্রিক কে বিদায় জানাবে এবং শরীরকেও সুস্থ রাখবে যার কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া থাকবে না বরং অনেক উপকার বিদ্যমান থাকবে। 

কিসমিসে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম , ম্যাগনেসিয়াম , পটাশিয়াম , ফাইবার এবং আয়রন বিদ্যমান যা পেটকে ঠান্ডা রাখতে এবং গ্যাস্টিক দূর করতে অভাবনীয় ভূমিকা রাখে। স্বাস্থ্য বিজ্ঞানীদের মতে খালি পেটে ভেজানো কিসমিসের সাথে বাদাম পেস্তা মিশিয়ে খেলে উচ্চ রক্তচাপসহ কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয় এবং একই সাথে দীর্ঘ গোলের গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর হয়। 

যারা প্রায়ই এ সমস্যায় ভোগেন তাদের প্রতিদিন খালি পেটে এই মিশ্রণটি খাওয়া উচিত। এতে করে তাৎক্ষণিক ফলাফল অনুভব করবেন। কিসমিস পেটকে ঠান্ডা করে যা পেটের এসিডিটি কমাতে সাহায্য করে। কিসমিস রক্ত পরিষ্কার করার পাশাপাশি লিভার কিডনি ভালো রাখেন যার ফলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা সমাধান হয়। 

কিসমিসে রয়েছে ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ যা নিয়মিত খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। এছাড়াও কিসমিসের অধিক পরিমাণে পটাশিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম থাকে যা এসিডিটি কমাতে সাহায্য করে।একই সাথে এটি টক্সিন অপসারণ , কিডনিতে পাথর এবং হৃদরোগের মতো গুরুতর সমস্যা সমাধান করে থাকে। কিসমিসে থাকা আইরন এবং ভিটামিন বি উচ্চ রক্তচাপ কমায় এতে করে শারীরিক সুস্থতা বজায় থাকে এছাড়াও কিসমিস বদহজমে অত্যন্ত উপকারী। কিসমিসে থাকা প্রচুর পরিমানে ফাইবার বদহজম নিরময় বিশেষ ভূমিকা পালন কর।  

এখন আপনাদেরকে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় কিসমিসের কিছু বিশেষ উপকারিতা সম্পর্কে জানাবো

  1. ফাইবারের গুরুত্বঃ কিসমিসের প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে যা পরিপাক প্রক্রিয়াকে সচল রাখে। ফাইবার হজম প্রক্রিয়াকে সহজ করে এবং গ্যাস্ট্রিকের সমস্যার বিরুদ্ধে কার্যকর ভূমিকা পালন করে।
  2. প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্টঃ কিসমিসে উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ফ্রি র‍্যাডীক্যালসের ক্ষতি থেকে শরীরকে রক্ষা করে। ফ্রি র‍্যাডীক্যালস শরীরে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস তৈরি করে যা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা বাড়িয়ে তোলে।অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এই সমস্যা প্রতিরোধে সাহায্য করে। 
  3. আদ্রতা বৃদ্ধিঃ কিসমিসের প্রচুর পরিমাণে পানি থাকে যা শরীরের আর্দ্রতা বজায় রাখতে সাহায্য করে। এটি গ্যাস্ট্রিক নিরসনের সহায়ক হয় এবং হজম প্রক্রিয়াকে সহজ করে।
  4. প্রাকৃতিক প্রোবায়োটিকঃ কিসমিস প্রাকৃতিক প্রোবায়োটিক হিসেবে কাজ করে যা হজম প্রক্রিয়ায় সাহায্য করে এবং পেটের ব্যাকটেরিয়ার ভারসাম্য রক্ষা করে। এটি গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা উপশমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। 

চিরতরে গ্যাস্ট্রিক দূর করায় কলা ব্যবহার এবং কার্যকারিতা 

গ্যাসের সমস্যা সমাধানে কলা একটি প্রাকৃতিক কার্যকরী উপায় হতে পারে। কলা সহজলভ্য এবং পুষ্টিগুণে ভরপুর এর মধ্যে রয়েছে ভিটামিন , খনিজ , ফাইবার যা হজম প্রক্রিয়াকে শক্তিশালী করে।গলাতে পটাশিয়াম , ভিটামিন সি , ভিটামিন বি৬  এবং ডায়েটারি ফাইবারে ভরপুর। আসুন তাহলে জেনে নি  গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা সমাধানে কলার উপকারিতা। 
  • প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্টঃ কলা প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। এটি পেটের এসিডকে নিয়ন্ত্রণ করে এবং এসিডিটির কারণে হওয়া জ্বালাপোড়া থেকে মুক্তি দেয়। কলার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এর প্রভাব গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা উপশমায় সহায়ক। 
  • উচ্চ ফাইবার উপাদানঃ গলায় থাকা ফাইবার হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করে। ফাইবার পেটের মধ্যে খাবার কে সহজে চলাচল করতে সাহায্য করে এবং গ্যাস্ট্রিক কমায়।
  • পটাশিয়াম এর ভূমিকাঃ কলায় প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম থাকে। কলায় থাকা পটাশিয়াম শরীরে ইলেকট্রোলাইট ব্যালেন্স বজায় রাখতে সাহায্য করে। এটি হজম প্রক্রিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করে এবং পেটের পেশিগুলির কার্যক্ষমতা বজায় রাখতে সহায়ক। 
কলার প্রাকৃতিক প্রটেকটিভ প্রভাবে গ্যাস্ট্রিক আলসার দূর হয়। এর মধ্যে থাকা মিউকাস পেটের দেয়ালকে আবৃত করে এসিডিটির ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা করে। গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা কলা বিভিন্নভাবে ব্যবহার করা যেতে পারে। তাহলে এবার চিরতরে গ্যাস্ট্রিক দূর করায় কলা কিভাবে ব্যবহার করবেন সে সম্পর্কে জেনে নিন ঃ- 
  • কাঁচা কলা খাওয়া
    গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় সরাসরি কাঁচা কলা খাওয়া সবচেয়ে সহজ ও কার্যকরী উপায়। প্রতিদিন একটি বা দুটি কাঁচা কলা খেলে চিরতরে গ্যাস্ট্রিক দূর করা সম্ভব। 
  • কলার বিশেষ মিশ্রণ
    পাকা কলার সাথে দই , মধু  এবং কিছু দারচিনি ভালোভাবে মিশিয়ে সেটি সকালে খালি পেটে ব্যবহার করলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা সমাধান করবে।
  • কলা ও ওটমিল এর মিশ্রণ
    সকালের নাস্তায় কলা ও ওটমিল খেলে হজম প্রক্রিয়া শক্তিশালী হয়। এক কাপ ওটমিল রান্না করে তাতে একটি পাকা কলা মিশিয়ে খেলে গ্যাস্টিকের সমস্যা দূর হবে। 
  • কলা ও মধু
    কলার সাথে মধু মিশিয়ে খেলে নিজেই এর উপকারিতা লক্ষ্য করবেন। এর জন্য একটি পাকা কলা নিন তার সাথে এক চামচ মধু মিশিয়ে ভালোভাবে ব্লেন্ড করে নিন। প্রতিদিন সকালে বা বিকালে এটি ব্যবহার করুন এতে করে আপনার গ্যাস্ট্রিকের সমস্যার সমাধান হবে।
  • কলার ডেজার্ট
    কলার ডেজার্ট তৈরি করতে একটি পাকা কলা নিন । এর সাথে এক চামচ চিয়া সিড আধা কাপ দই এবং সামান্য মধু মিশিয়ে নিয়ে এটিকে ভালোভাবে ব্লেন্ড করে নিয়মিত ব্যবহার করলে হজম প্রক্রিয়া উন্নত হবে এবং পেটের সমস্যা দূর হবে। 
  • কলা ও পিনাট বাটার
    একটি পাকা কলা চটকে তার সাথে এক চামচ পিনাট বাটার মিশিয়ে খেলে পেটের হজম শক্তি বৃদ্ধি পায় এবং পরিপাকতন্ত্র সচল থাকে। 

চিরতরে গ্যাস্ট্রিক দূর করতে আদার ব্যবহার এর উপায় এবং কার্যকারিতা

আদার বিভিন্ন উপকারিতা রয়েছে যা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যার সমাধানে কাজ করে। গ্যাস্ট্রিকের সমস্যার সমাধানে আদাব ব্যবহারের উপকারিতা গুলো জেনে নিন। 

আদা ব্যবহার হজম প্রক্রিয়া উন্নত হয়ঃ আদার মধ্যে উপস্থিত জিনজারলস এবং শোগাওলোস হজম প্রক্রিয়াকে শক্তিশালী করে এতে করে পেটের মধ্যে খাবার গুলো দ্রুত চলাচল করতে পারে যার ফলশ্রুতিতে গ্যাসের সমস্যা কমে যায়।

প্রদানশক গুণাবলীঃ আদার মধ্যে প্রদাহ নাশক গুণাবলী বিদ্যমান যা পেটের গ্যাস্ট্রিক আলসারের প্রভাব কমাতে সাহায্য করে। 

আদা অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুরঃ আদাতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে বিদ্যমান যা হজম প্রক্রিয়াকে শক্তিশালী করে এতে করে পেটে গ্যাস্ট্রিক হওয়ার সম্ভাবনা কমিয়ে দেয়।

আদাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ব্যাকটেরিয়া নাশক ক্ষমতাঃ আদা ব্যাকটের বিরোধী গুনে পরিপূর্ণ যা পেটের ব্যাকটেরিয়া ইনফেকশন কমাতে সাহায্য করে এবং একটি হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করে একই সাথে পেটের সমস্যার সমাধানে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। 

আদা ব্যবহার  পেট ফাঁপা সমস্যার সমাধানঃ আদা পেট ফাঁপা সমস্যার সমাধান করে এবং পেটের গ্যাসকে কমিয়ে স্বস্তি প্রদান করে। নিয়মিত আদায় করে পেট ফাঁপার সমস্যা চিরতরে সমাধান হবে। এর ফলে চিরতরে গ্যাস্টিকের সমস্যা দূর হবে।

আদা অন্ত্রের স্বাস্থ্য বজায় রাখেঃ আদা অন্ত্রের স্বাস্থ্য উন্নত করে এবং এটি অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়া ভারসাম্য বজায় রাখুন যার ফলে পেটের প্রদাহ দূর হয় এবং গ্যাস্ট্রিকের সমস্যার সমাধান হয় একই সাথে পেটে জ্বালাপোড়া ভাব দূর হয়। আদা গ্যাস্ট্রিক নিরাময়ে একটি কার্যকরী উপায়। প্রাচীনকাল থেকেই বিভিন্ন রোগ নিরাময়ে আদা ব্যবহার হয়ে আসছে বিশেষ করে হজম প্রক্রিয়া উন্নত করতে ও পেটের সমস্যার সমাধানে এবং গ্যাস্ট্রিক এর সমস্যা সমাধানে আদার ব্যবহার হয়ে আসছে।

গ্যাস্ট্রিক নিরাময়ে আদা চা তৈরীর নিয়ম

আদা চা গ্যাস্ট্রিক সমস্যার জন্য অত্যন্ত উপকারী। আধা তৈরি করার জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ হলো এক ইঞ্চি টুকরা আদা, ১ কাপ পানি ও ২ চামচ মধু। এটি তৈরি করার পদ্ধতি হলো প্রথমে আদা টুকরো টুকরো করে কেটে নিন। তারপর একটি পাত্রে পানি ফুটিয়ে নিন এবং তার মধ্যে পাতাগুলো ছেড়ে দিন। তার সাথে কিছু পরিমাণ চাপাতি দিয়ে দিতে পারেন তারপর ১৫ মিনিট ফুটিয়ে একটি কাপে চারটি ঢেলে নিন এবং তার সাথে দুই চামচ মধু মিশিয়ে দিন। প্রতিদিন সকালে এবং বিকালে এটি সেবনের ফলে গ্যাস্টিকের সমস্যার সমাধান হবে। 

আদা ও মধুর মিশ্রণ তৈরি করার নিয়ম

আদা মধুর মিশ্রণ তৈরি করতে প্রয়োজন এক ইঞ্চি সমান আদা এবং এক চামচ মধু। এবার একটি বাটিতে আদা রেখে তার রস করে নিন এবং সেই রসের সাথে মধুটুক মিশিয়ে দিন। তৈরি হয়ে গেল আপনার আধা মধু মিশ্রণ। প্রতিদিন সকালে এবং বিকালে এই মিশ্রণটি ব্যবহার করলে পেটের হজম প্রক্রিয়া শক্তিশালী হবে এবং গ্যাস কমাতে সাহায্য করবে। 

আদাও লেবুর মিশ্রণ তৈরি করার নিয়ম

আদা ও লেবুর মিশ্রণ তৈরি করতে প্রথমে দুই ইঞ্চি সমান একটি আদা নিন এবং আধাটির রস বের করে নিন। তারপর একটি লেবু নিন এবং সেটিরও রস বের করে নিন। এবার একটি গ্লাসের সামান্য পানি নিন তার ভেতর আদার রস ও লেবুর রস দিয়ে দিন সেটিকে সামান্য পরিমাণে চামচ দিয়ে নেড়ে নিন। মনে রাখবেন এর ভিতরে কোনোভাবেই লবণ মেশাবেন না। মিশ্রণটি প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে ব্যবহার করুন দেখবেন আপনার পেট ফুল অভাব কমে যাবে এবং গ্যাসের সমস্যায় চিরতরে সমাধান হবে। 

চিরতরে গ্যাস্ট্রিক দূর করার প্রাকৃতিক ৫টি কার্যকরী উপায় জানুন

আদা ও জিরার মিশ্রণ

আদা ও জিরার মিশ্রণ তৈরি করতে লাগবে 2 ইঞ্চি সমান একটি আদা এবং আধা চা চামচ ঝিরার গুঁড়া। এবার একটি পার্টিতে আদার রস করে নিয়ে তার সাথে জিরার গুড়া মিশিয়ে নিন। প্রতিদিন খাবার গ্রহণ করার পূর্বে মিশ্রণটি ব্যবহার করুন এতে করে খাবার গ্রহণের পর আপনার খাবারটি খুব দ্রুত হজম হবে এবং পেটে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হবে না। 

আদা ও পুদিনার মিশ্রণ

আদা ও পুদিনার মিশ্রণ গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা চিরতরে দূর করতে সক্ষম। এই মিশ্রণটি তৈরি করতে তাজা আদার রস এক চামচ এবং পুদিনা পাতা গুড়া এক চামচ একটি বাটিতে ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর পূর্বে এটি ব্যবহার করুন এতে করে হজম শক্তি বৃদ্ধি পাবে, পরিপাকতন্ত্র ভালো থাকবে এবং একই সাথে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যার সমাধান হবে। 

চিরতরে গ্যাস্ট্রিক দূর করতে জিরা পানির ব্যবহার এর নিয়ম এবং গুণাবলী

জিরা পানি পেটের হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করে. সকালে বা বিকালে হালকা নাস্তার পর এটি ব্যবহারে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দেখা দিবে না। প্রতিদিনের রান্নার কাজে এই জিরা নামক মশলাটি ব্যবহৃত হয় এতে করে খাবারের স্বাদ বৃদ্ধি পায়। বিশেষ করে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যার সমাধানে জিরার পানি অত্যন্ত কার্যকরী । জিরার মধ্যে উপস্থিত বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করে এবং পেটের সমস্যা সমাধান করে। নিম্নে জিরা পানির গুণাবলী ও ব্যবহার সম্পর্কে আলোচনা করা হল । 

হজম প্রক্রিয়াকে শক্তিশালী করে গ্যাস্ট্রিক সমস্যার সমাধান 

জিরার একটি প্রধান গুণ হল এটি হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করে। এর মধ্যে থাকা থাইমল হজম রস নিরসনে সাহায্য করে যা হজম প্রক্রিয়াকে সক্রিয় রাখে। এটি পাকস্থলীর মধ্যে এনজাইমের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে যা খাবার দ্রুত হজম করতে সাহায্য করে। 

অ্যান্টিইনফ্লামেটরি গুণসমৃদ্ধ যার মাধ্যমে গ্যাস্ট্রিক নিরসন 

জিরার মধ্যে প্রচুর পরিমাণ  অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি গুণ বিদ্যমান পেটের প্রধান দূর করতে সাহায্য করে এবং গ্যাস্ট্রিক আলসার ও অন্যান্য প্রধা ওজনিত সমস্যার সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। 

অন্ত্রের স্বাস্থ্য উন্নত করতে জিরার পানি

জিরা পানি পেটের গ্যাস কমাতে খুবই কার্যকরী। জিরা পানি অন্ত্রের স্বাস্থ্য উন্নত করে এবং ভালো ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধিতে সাহায্য করে একই সাথে খারাপ ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি কমায় যার ফলে অঞ্চলের স্বাস্থ্য ভালো থাকে এবং হজম প্রক্রিয়ার সক্রিয় থাকে। 

গ্যাস্ট্রিকের সমস্যার সমাধানে জিরা পানি

জিরা পানির মধ্যে উপস্থিত ভোলাটাইল অয়েল গ্যাসের সমস্যা সমাধানে খুবই কার্যকরী। এটি পেটের অতিরিক্ত গ্যাস নিঃসরণের পাশাপাশি পেটের অস্বস্তি, জ্বালাপোড়া ভাব দূর করে। 

জিরো পানি রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে যা গ্যাস্ট্রিক রোধে সহায়ক

জিরা পানি মধ্যে থাকা পুষ্টি উপাদান রক্ত সঞ্চালনকে বৃদ্ধি করে এবং হৃদপিণ্ডকে ভালো রাখেন এতে করে রক্ত প্রবাহ সঠিক থাকে ফলে শরীরের সব অঙ্গ পতঙ্গ সঠিকভাবে কাজ করে। এর ফলশ্রুতিতে হজম প্রক্রিয়া সঠিকভাবে কাজ করে এবং গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা সমাধান করেন। 

রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে গ্যাস্ট্রিকের উপকারিতা

জিরা পানি রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে যেটি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য অত্যন্ত উপকারী। নিয়মিত জেলা পানি পান করলে রক্তের শর্করার পরিমাণ ঠিক থাকবে, এতে করে হজম প্রক্রিয়ার সক্রিয় হবে একই সাথে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যার সমাধান হবে এবং ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমে যাবে। 

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি 

জিরা পানি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বৃদ্ধি করে।  জিরা পানির মধ্যে থাকা ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং সকল রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করে। 

জিরা পানির মধ্যে রয়েছে প্রদাহ নাশক গুণাবলী

জিরা পানি প্রদাহ নাশক হিসেবে কাজ করে। জিরার পানি হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করে এতে করে পেটের প্রদাহ দূর হয়। 

ডিটক্সিফিকেশন গুণাবলী

জিরা পানি শরীরের ডিটক্সিফিকেশন করতে সাহায্য করে যেটি লিভার ও কিডনির কার্যক্ষমতা বাড়ায় এবং শরীরের বিষাক্ত পদার্থ নিঃসরণ করে ফলশ্রুতিতে শরীরের পরিপাকতন্ত্র ভালো থাকে এবং গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা চিরতরে নিঃসরণে সামর্থ হয়। 

গ্যাস্ট্রিক নিরসনে জিরো পানি একটি প্রাচীন ও প্রমাণিত পদ্ধতি। উপরে উক্ত আলোচনায় জিরা পানি ব্যবহারের ফলে কার্যকারিতা সম্পর্কে বলা হয়েছে তাহলে এবার জেনে নিন কিভাবে জিরা পানি প্রস্তুত করবেন এবং তার সাথে কি কি উপকরণ ব্যবহার করবেনঃ 
  • সাধারণ জিরা পানির ব্যবহারঃ
জিরা পানি তৈরি করো অত্যন্ত সহজ। সাধারণ চীনা পানিতে প্রয়োজনীয় উপাদান হলো শুধুমাত্র দুই টেবিল চামচ জিরা গুড়া এবং তার সাথে এক লিটার বিশুদ্ধ পানি। এবার জিরার গুড়া পানির সাথে ভালোভাবে মিশিয়ে নেই এবং সেটির প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে এবং রাতে ঘুমানোর পূর্বে ব্যবহার করুন এতে করে আপনার গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা চিরতরে দূর হবে। 
  • জিরা , আদা এবং লেবুর রসের মিশ্রণ তৈরি করার নিয়মঃ
আদা , জিরা ও লেবুরে মিশ্রণ ব্যবহারের ফলে গ্যাস্ট্রিক চিরতরে দূর হবে এবং পেটের জ্বালাপোড়া ভাব দূর হবে। এই মিশ্রণটি তৈরি করতে প্রথমে দুই টেবিল চামচ জিরার গুড়া নিন, ২ ইঞ্চি সমান তাজা একটি আদানে, এক লিটার সমান পানি নেই এবং দুই টেবিল চামচ লেবুর রস নিয়ে নিন। এবারও এই এক লিটার পানির মধ্যে আদার রস, জিরার গুড়া এবং লেবুর রসটি ভালোভাবে মিশিয়ে নেই তারপর এটি একটি ফ্রিজে ঠান্ডা করতে রেখে দিন। মিশ্রণটি ঠান্ডা হবার পর ব্যবহার করুন। মিশ্রণটি আপনি দিনে যেকোনো সময় ব্যবহার করতে পারেন এতে করে আপনার গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা নিশ্চিত ভাবে হয়ে যাবে। 
  • জিরা, পুদিনার পাতা ও মধুর মিশ্রণ তৈরি করার নিয়ম
এই মিশ্রণটি তৈরি করতে যে যে উপকরণগুলো লাগবে সেগুলো হলো দুই টেবিল চামচ জিরার গুড়া, 10 থেকে 15 টি পুদিনার পাতা, এক লিটার পানি, চার টেবিল চামচ মধু ও একটি জগ। 
প্রথমে পুদিনা পাতাগুলি একটি পাত্রে সারারাত ভিজিয়ে রাখতে হবে তারপর সেই পানি একটি জগে ঢেলে নিন তারপর এর মধ্যে জিরার গুড়া ও মধু মিশিয়ে দিন তারপর প্রতিদিন সকালে খালি পেটে মিশ্রণটি সেবন করুন এতে করে আপনার পরিপাকতন্ত্র ভালো থাকবে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যার সমাধান হবে। 
  • গ্যাস্ট্রিক নিরসনে জিরা, এলাচ ও দারচিনির মিশ্রণ তৈরি করার নিয়ম

এই মিশ্রণটি তৈরি করতে প্রথমে দুই টুকরা দারচিনি ও এলাচ নিন এবং সেটি একটি পাত্রে ১৫ থেকে ২০ মিনিট ঘটিয়ে নিন যখন পানিটির কালার কিছুটা লালচে হয়ে যাবে পানিটির নামিয়ে ঠান্ডা করতে রেখে দেই।  এবার এটি ঠাণ্ডা হয়ে যাবার পর তার মধ্যে 2 টেবিল চামচ জিরার গুড়া মিশিয়ে নিন। এবার সবটুকু মিশ্রণ এক লিটার একটি বোতলের মধ্যে ঢেলে ফেলুন এবং বাকি থাকা অংশ সাধারণ পানি দিয়ে ভরে নিন। তৈরি হয়ে গেল একটি অসাধারণ মিশ্রণ যা নিয়মিত ব্যবহারের ফলে গ্যাস্ট্রিক চিরতরে দূর হয়ে যাবে। 

উপরিউক্ত আলোচনায় জিরার বিভিন্ন বিভাগ সম্পর্কে বলা হয়েছে এবং তার কার্যকারিতা সম্পর্কে বলা হয়েছে। উপরোক্ত নিয়মাবলী অনুযায়ী মিশ্রণ গুলি ব্যবহার করলে হজম প্রক্রিয়া উন্নত হবে এবং গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা ধীরে ধীরে দূর হয়ে যাবে।

চিরতরে গ্যাস্ট্রিক সমস্যা দূর করতে পুদিনার পাতার ব্যবহার ও তার উপকারিতা 

পুদিনা পাতায় প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল, অ্যান্টিভাইরাস, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টিঅ্যালার্জিক গুণাবলী বিদ্যমান যা স্বাস্থ্যের জন্য নানাভাবে কার্যকরী এবং এটি এসিডিটি কমাতে অত্যন্ত প্রহরে। পুদিনা পাতার বৈজ্ঞানিক নাম হল মেন্থা স্পিকাটা। প্রাচীনকাল থেকেই হজম প্রক্রিয়া উন্নত করতে এটি ব্যবহার হয়ে আসছে। হজম প্রক্রিয়া উন্নত করতে এটি অত্যন্ত কার্যকরী। 

পুদিনা পাতায় থাকা মেন্থল হজম রসের নিঃসরণ বাড়াতে সাহায্য করে যা খাবার হজম প্রক্রিয়াকে সজল রাখে এবং অন্ত্রের পেশি শিথিল করতে সাহায্য করে। এছাড়াও পুদিনা পাতা পেটের ফোলা ভাব কমায়।গ্যাস্ট্রিক সমস্যার অন্যতম প্রধান লক্ষণ হচ্ছে পেট ফোলা ভাব। পুদিনা পাতার মধ্যে থাকা অ্যান্টিস্পাসমেডিক গুণাবলী পেটের ফলাফল কমায় এবং অন্তরে গ্যাস জমতে বাধার সৃষ্টি করে। 
 

পুদিনা পাতা একইসাথে অন্ত্রের প্রদাহ কমায়। পুদিনা পাতায় থাকা অ্যান্টিইনফ্লামেটরি অন্ত্রের প্রদাহ ভাব কমায় এবং হজম প্রক্রিয়াকে স্বাভাবিক করে। পেটের ব্যথা দূর করতে পুদিনার পাতা অত্যন্ত কার্যকরী। পুদিনার পাতা অন্ত্রের পেশীকে শীতল রাখে এতে করে পেটের মাংসপেশির কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পায় যার ফলশ্রুতিতে হজম প্রক্রিয়া সচল হয়। এছাড়াও পুদিনা পাতায় লিভারের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধির একটি বিশেষ গুনাগুন রয়েছে। পুদিনা পাতা লিভারের কার্যক্ষমতা কে উন্নত করে এতে করে হজম প্রক্রিয়া স্বাভাবিক থাকে এবং পুদিনা পাতায় থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট লিভারের স্বাস্থ্য রক্ষায় কার্যকর ভূমিকা পালন করে। 

চিরতরে গ্যাস্ট্রিক দূর করার প্রাকৃতিক ৫টি কার্যকরী উপায় জানুন

এছাড়াও পুদিনা পাতা ব্যবহারে অন্ত্রের স্বাস্থ্য উন্নত হয়, এসিডিটি কমায়, রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, প্রাকৃতিক ডিটক্সিফায়ার হিসেবে কাজ করে, হার্ট বার্ণ কমাতে সাহায্য করে, পেটের আলসার নিরাময়ের সহায়, হজম রস নিঃসরণ বাড়ায়, এর মধ্যে প্রচুর পরিমাণে প্রদাহ নাশক গুণ বিদ্যমান থাকে, এটি কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে, অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়া ভারসাম্য রক্ষা করে, পেটের গ্যাস কমায়, মাংসপেশীর শীতলতা বৃদ্ধি করে। এছাড়াও পুদিনা পাতা ব্যবহারের নানাবিধ গুণাবলী বিদ্যমান। 

আসুন তবে জেনে নিন কি কি উপায়ে পুদিনার পাতা ব্যবহার করবেন এবং তা কখন কখন ব্যবহার করলে আপনার জন্য সুফল বয়ে আনবেঃ 
গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় পুদিনার পাতা ব্যবহারের অনেক উপায় রয়েছে। পুদিনা পাতা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করতে সক্ষম এবং এটি হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করে এবং পেটের অসতী কমায়। 

1. পুদিনা পাতার রস তৈরি করার উপায়

উপকরণঃ
  • তাজা পুদিনা পাতা একমুঠো
  • এক গ্লাস পানি
  • 2 চামচ লেবুর রস
  • 2 চামচ মধু
প্রস্তুত করার নিয়মঃ
  • প্রথমে পুদিনা পাতা ভালোভাবে ধুয়ে নিন
  • তারপর একটি ব্লেন্ডারে পুদিনা পাতা ঢেলে দিন এবং তার মধ্যে এক গ্লাস পানি যোগ করুন
  • ভালোভাবে ব্লেন্ড করে রস বের করে নিন
  • রস থেকে নিয়ে তার মধ্যে লেবুর রস ও মধু মিশিয়ে দিন
  • এই রস প্রতিদিন খালি পেটে পান করলে গ্যাস্টিকের সমস্যা চিরতরে সমাধান হবে। 
2. পুদিনা পাতার চা তৈরি করার নিয়ম

উপকরণঃ
  • তাজা পুদিনার পাতা ১০ থেকে ১৫টি
  • দুই কাপ পানি
  • দুই চামচ লেবুর রস
  • 2 চামচ মধু
প্রস্তুত করার নিয়মঃ
  • প্রথমে পুদিনার পাতাগুলো ভালোভাবে ধুয়ে নিন
  • তারপর একটি পাত্রে দুই কাপ পানি গরম করুন
  • পানি ফুটে উঠলে পুদিনার পাতাগুলো ছেড়ে দিন
  • ১৫ থেকে ২০ মিনিট পানি কি ফোটান
  • তারপর একটি পাত্রে পানিটি ছেঁকে নিন
  • এবার ওই পানির সাথে মধু ও লেবুর রস মিশিয়ে নিন
  • এই পুদিনা চা প্রতিদিন দুই থেকে তিনবার পান করুন এতে করে আপনার গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা চিরতরে দূর হয়ে যাবে 
3. পুদিনা পাতার পানীয় তৈরি করার নিয়ম

উপকরণঃ
  • একমুঠো তাজা পুদিনা পাতা
  • 1 লিটার পানি
  • একটি লেবু
  • একটি শসা হচ্ছে
প্রস্তুত করার নিয়মঃ
  • প্রথমে পুদিনা পাতাগুলো ভালো করে ধুয়ে নিন। 
  • তারপর একটি ব্লেন্ডার নিন এবং তার ভিতরে পাতাগুলো ও শসা দিয়ে ভালোভাবে ব্লেন্ড করে নিন।
  • একটি ছাক নিয়ে নিন এবং মিশ্রণটি ছেঁকে নিন।
  • তারপর মিশ্রণটির মধ্যে লেবুর রস মিশিয়ে দিন
  • এবার মিশ্রণটিকে ফ্রিজে ঠান্ডা হতে রেখে দিন
  • সারাদিন এই পানীয় পান করার মাধ্যমে পেট ঠান্ডা থাকবে ও গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর হবে। 
4. গ্যাস্ট্রিক নিরাময় পুদিনা পাতার সালাদ তৈরি করার নিয়ম

উপকরণঃ
  • এক মুঠো তাজা পুদিনা পাতা
  • একটি শসা
  • একটি টমেটো
  • একটি পেয়াজ
  • একটি লেবু
  • লবণ
  • সামান্য গোলমরিচের গুড়া
প্রস্তুত করার নিয়মঃ 
  • প্রথমে পুদিনা পাতা , শসা ,পেঁয়াজ ও লেবু ভালো করে ধুয়ে নিন। 
  • তারপর এগুলো ছোট ছোট করে কেটে নিন। 
  • এবার একটি পাত্রে উপকরণ গুলো মেশান। 
  • উপকরণ গুলোর মধ্যে লেবুর রস , লবণ ও গোলমরিচের গুঁড়া মিশিয়ে দেন।
  • এই সালাদ প্রতিদিন ব্যবহারে পেট ঠান্ডা থাকবে এবং পেটের পরিপাকতন্ত্র কার্যকরী থাকবে ফলে গ্যাস্ট্রিক সমস্যা চিরতরে দূর হবে।
5. পুদিনা পাতার ট্যাবলেট তৈরি করার নিয়ম

উপকরণঃ
  • 2 টেবিল চামচ শুকনো পুদিনা পাতা
  • এক টেবিল চামচ চিনি বা গুড়
  • এক চামচ পানি

আরো পড়ুনঃ  পুরুষের জন্য মেথি খাওয়ার নিয়ম

প্রস্তুত করার নিয়মঃ
  • প্রথমে শুকনো পুদিনা পাতার গুড়ো করে নিন
  • তারপর সেই চিনি বা গুড় পুদিনা পাতার গুড়ির সাথে ভালোভাবে মেশান
  • তারপর এটিকে ছোট ছোট ট্যাবলেটের আকার তৈরি করুন
  • এটি প্রতিদিন দুই থেকে তিনবার খেলে হজম প্রক্রিয়া সক্রিয় হবে এবংগ্যাস্ট্রিকের সমস্যা চিরতরে দূর হবে।
6. পুদিনা , মধু ও গোলমরিচের মিশ্রণ তৈরি করার পদ্ধতি

উপকরণ:
  • একমুঠো তাজা পুদিনা পাতা
  • চার টেবিল চামচ মধু
  • এক টেবিল চামচ গোল মরিচের গুড়া
  • এক কাপ পানি
তৈরি করার নিয়ম:
  • প্রথমে পুদিনা পাতা ভালোভাবে ধুয়ে নিন
  • তারপরে একটি ব্লেন্ডারে করে পুদিনা পাতার রস বের করে নিন
  • তারপরেই রসের সাথে মধু ও গোলমরিচের গুড়া মিশিয়ে দিন
  • মিশ্রণটি ফ্রিজে ঠান্ডা হওয়ার জন্য রেখে দিন
  • প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে এটি ব্যবহার করুন
  • এটি ব্যবহারের ফলে গ্যাস্ট্রিক চিরতরে দূর হয়ে যাবে. 
পুদিনা এবং আদা চা তৈরি করার নিয়ম

উপকরণঃ 
  • একমুঠো তাজা পুদিনা পাতা নিন
  • ২ ইঞ্চি সমান একটি হাঁদা নিন
  • দুই কাপ পানি নিন
  • দুই চামচ মধুনি
  • এক চামচ চাপাতি নিন
প্রস্তুত করার নিয়মঃ
  • প্রথমে পুদিনা পাতা ও আদা ভালো করে ধুয়ে নিন
  • একটি পাত্রে দুই কাপ পানি গরম করুন
  • এর মধ্যে পুদিনার পাতা , আদা , চাপাতি ঢেলে দিন
  • এবার এটিকে ১৫ থেকে ২০ মিনিট ফুটিয়ে নিন
  • তারপর এটি একটি কাপে ঢেলে নিন এবং মধুটুক যোগ করে দিন। 
  • তৈরি হয়ে গেল পুদিনা চা নিয়মিত ব্যবহারে গ্যাস্ট্রিক আলসার সহ পেটের সকল ধরনের সমস্যা দূর হবে। 

শেষ কথা

শেষ কথা হিসেবে বলা যায় যে, গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করতে পুদিনা পাতা , আদা , জিরা পানে, লেবু  ইত্যাদি উপাদান গুলি অত্যন্ত কার্যকর। এগুলো হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করে, অন্ত্রের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে, পেট ফোলা ভাব কমায় এবং অস্বস্তি দূর করে। নিয়মিত সঠিক উপায়ে এই প্রাকৃতিক উপাদান গুলি ব্যবহার করলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা চিরতরে সমাধান হবে। স্বাস্থ্যকর খাদ্য অভ্যাস ও জীবন যাপন পদ্ধতির সাথে এই উপাদান গুলির ব্যবহার গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা নিরসনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। সুতরাং প্রাকৃতিক ও নিরাপদ পদ্ধতি অনুসরণ করুন এবং সুস্থ আরামদায়ক জীবন যাপন নিশ্চিত করুন। 

    এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

    পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
    এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
    মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

    টপ ট্রিক্সস্‌ আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। সব কমেন্টস রিভিউ করা হয়, ধন্যবাদ।;

    comment url